প্রতিবেদক: সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর হামলার ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মুফতি আব্দুল হান্নানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে প্রস্তুতি নিচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষ বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি বলেন, কারাবিধি অনুসারে আমরা মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
রবিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
এক প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মুফতি হান্নানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার সঙ্গে কোনো জঙ্গি হামলার হুমকি নেই।
তিনি বলেন, প্রাণভিক্ষা চেয়ে মুফতি হান্নানের করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এখন জেল কোড অনুযায়ী তার ফাঁসি কার্যকরের পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত ৩ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে তিনি কাশিমপুর কারাগারের জেল সুপারের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ খানের কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন। কিন্তু প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ করে দেন রাষ্ট্রপতি।
এর আগে, ২৩ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে কারা এক অনুষ্ঠানে মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন জানিয়েছিলেন, মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়েছে মুফতি হান্নানসহ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনকে। এখন কারাবিধি অনুযায়ী তারা প্রাণভিক্ষার জন্য সাতদিন সময় পাবেন।
প্রসঙ্গত, ২২ মার্চ বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে বিচারিক আদালত থেকে এ পরোয়ানা কারাগারে পৌঁছে। সিলেটের জেল সুপার ছগির আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, হুজি নেতা মুফতি হান্নান, শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল এবং দেলওয়ার ওরফে রিপনের মৃত্যু পরোয়ানা আমরা কাশিমপুর কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছি। নিয়ম অনুযায়ী, দণ্ডিত ব্যক্তি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইলে আপাতত এ পরোয়ানা সাইলেন্স থাকবে।
তিনি আরো বলেন, এর আগেও মৃত্যু পরোয়ানা এসেছে। তবে আসামিরা রিভিউসহ অন্যান্য আইনী কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ায় তা সাইলেন্স থাকে।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ.) এর মাজারের প্রধান ফটকে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর উপর গ্রেনেড হামলা হয়। হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত এবং আনোয়ার চৌধুরীসহ ৭০ জন আহত হন। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর মুফতি হান্নান, শরীফ শাহেদুল ওরফে বিপুল, দেলওয়ার ওরফে রিপনকে মৃত্যুদন্ড এবং মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন দ- দেন সিলেট দ্রুত বিচার আদালত।
রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে আসামিরা। গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি পূর্বোক্ত রায় বহাল রাখেন হাইকোর্ট। পরে আসামিদের আপিল গত ৭ ডিসেম্বর খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি আসামিরা রিভিউ আবেদন করেন। ১৯ মার্চ সে আবেদন খারিজ হয়। পরে গতকাল মঙ্গলবার রিভিউ খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।