বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি এ এন এম বশির উল্লাহর বেঞ্চ সাংসদ রানাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন।
একই সঙ্গে কেন তাকে স্থায়ী জামিন দেওয়া হবে না মর্মে রুলও দিয়েছে আদালত।
রানার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার ও রুশো মোস্তফা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম মনিরুজ্জামান কবির।
পরে মনিরুজ্জামান কবির বলেন, “এমপি রানাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়া হয়েছে এবং আদালত যে রুল দিয়েছে সেটির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি জামিনে থাকবেন।”
আইনজীবী রুশো মোস্তফা বলেন, সংসদ সদস্য রানার অসুস্থতা এবং ১৬৪ ধারায় মামলার অন্য দুই আসামি মোহাম্মদ আলী ও আনিসুল ইসলাম রাজার দেওয়া জবানবন্দীতে এমপি রানার নির্দেশে মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদকে হত্যা করা হয়েছে এমন কোনো তথ্য নেই বলে জামিন চাওয়া হয়।
সাংসদ রানা বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “হাই কোর্টের এই আদেশের ফলে তা মুক্তিতে আপাতত কোনো বাধা নেই।”
সবশেষ গত ৩০ মার্চ রানার জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল উপস্থাপন হয়নি মর্মে খারিজ করে দেয় বিচারপতি এ এক এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের বেঞ্চ।
আইনজীবী রুশো মোস্তফা জানান, এরপর এমপি রানা গত ২ এপ্রিল নিম্ন আদালতে জামিন আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সেটিও খারিজ হলে গত ৪ এপ্রিল হাই কোর্টে আবেদন করেন তিনি।
এর আগে আরও তিনবার জামিন নিতে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রানা। দুইবার তার জামিন আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়, আরেকবার জামিন আবেদন উপস্থাপন হয়নি মর্মে খারিজ হয়ে যায়।
গত ১৮ জানুয়ারি সাংসদ রানাকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে বিচারপতি শেখ আবদুল আউয়াল ও বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের হাই কোর্ট বেঞ্চ।
গত বছরের ১১ ডিসেম্বর বিচারপতি ফরিদ আহাম্মদ ও বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হকের বেঞ্চ রানার জামিন আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ (আউট অব লিস্ট) দেয়।
তার আগে গত ২৮ নভেম্বর সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি আতাউর রহমান খানের বেঞ্চও রানার জামিন আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছিল।
আর বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরীর বেঞ্চ গত বছরের ৯ অক্টোবর রানার জামিন আবেদন খারিজ করে দেয়।
আওয়ামী লীগের টাঙ্গাইল জেলা কমিটির সদস্য ফারুক আহমেদকে ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। ওই মামলায় টাঙ্গাইল- ৩ (ঘাটাইল) আসনের এমপি রানাকে প্রধান আসামি করে এবং তার তিন ভাইসহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
দীর্ঘদিন পালিয়ে থেকে সাংসদ রানা গত ১৮ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইলের আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠান বিচারক। জেলা ও দায়রা জজ তার জামিন আবেদন নাকচ করে দিলে এই সাংসদ হাই কোর্টে আবেদন করেন।