প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে তিস্তার পানি চুক্তি না হওয়ার বিষয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী দিল্লি গেলেন, আমরা চাতক পাখির মতো বসে থাকলাম। তিস্তা দিয়ে কলকল করে পানি আসবে। চাইলেন পানি, দিল বিদ্যুৎ। চাইলেন কামান, দিল বিস্কুট কিংবা ললিপপ।’
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ‘জাতীয় নির্বাচন: নির্বাচনকালীন সরকার গঠনে নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘আদর্শ নাগরিক আন্দোলন’ নামে একটি সংগঠন এ সভার আয়োজন করে।
বি চৌধুরী বলেন, পানির ব্যাপারে মমতা মোদির চেয়েও বড়। ‘চেয়েছিলাম পানি, পেলাম বিদ্যুৎ’—কথাটি প্রধানমন্ত্রী দুঃখ ও ক্ষোভ নিয়েই বলেছেন। তিস্তার পানি বিষয়ে আগে মমতার সঙ্গে সমঝোতা করে দিল্লি গেলে ভালো হতো। একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী অন্য দেশের একটি রাজ্যের মন্ত্রীর কাছে হেরে গেলেন, এটা ভালো লাগেনি।’
নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী কিছু প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ১০ বা ১১ জনের মন্ত্রিসভা হবে, অর্ধেক তৎকালীন বিরোধী দল বিএনপিকে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। স্বরাষ্ট্র, সংস্থাপন মন্ত্রণালয় দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন বিএনপিকে। এটা ভালো প্রস্তাব, যদি প্রশাসনিক কূটচাল না হয়। প্রধানমন্ত্রী ২০১৪ সালের এই প্রস্তাব আবার দিতে পারেন।’
হেফাজতের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার বিষয়ে বি চৌধুরী বলেন, ‘হেফাজতের নেতারা যেসব দাবি করতেন, ধীরে ধীরে সেগুলোর সঙ্গে আপস করছেন। গ্রিক দেবীর মূর্তির বিষয়ে বললেন, সেটা নাকি আপনারও ভালো লাগে না। দাওরায়ে হাদিসকে এম এ পাসের সমমর্যাদা দিলেন, তাতে আপত্তি নেই। দৃষ্টিভঙ্গির নাটকীয় পরিবর্তন, সন্দেহ জাগে। আগাম নির্বাচন দেবেন কি না।’
বি চৌধুরী বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনমুখী চিন্তার কারণে মনে হয় তাঁরা নিজের পক্ষে ভোট টানার জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছেন। হেফাজতের মধ্যে আরও যেসব সংগঠন আছে, তাদের সঙ্গেও প্রকাশ্যে বা গোপনে আলোচনা হতে পারে।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, সাবেক সাংসদ গোলাম মাওলা প্রমুখ।