প্রতিবেদক: ব্যাংকের কোনো আমানতকারীর মৃত্যু ঘটলে ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুসারে তার মনোনীত নমিনিই আমানতের ওই অর্থ পাবেন। আইন অনুসারে নমিনিকে আমানতের অর্থ পরিশোধ করতে হবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ-সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করেছে। পরিপত্রটি এদিনই দেশের সব তফসিলি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আলোচিত পরিপত্রে বলা হয়েছে, সম্প্রতি কিছু কিছু ব্যাংক আমানতকারীদের মনোনীত নমিনির কাছ থেকে অঙ্গীকারনামা নিয়েছে যে, আমানতকারীর মৃত্যুর পর তাঁদের মনোনীত নমিনি মৃত ব্যক্তির হিসাবে রক্ষিত আমানত প্রাপ্তির জন্য যোগ্য বা উপযুক্ত হিসেবে বিবেচিত না-ও হতে পারেন। কিন্তু এই অঙ্গীকারনামা ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ (২০১৩ সাল পর্যন্ত সংশোধিত)-এর ১০৩ ধারায় নির্দেশনার পরিপন্থী। এ অবস্থায় ব্যাংকগুলোকে ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুসরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ, গত বছরের ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ একটি মামলার রায়ে মৃত ব্যক্তির ব্যাংকে রেখে যাওয়া টাকা উত্তরাধিকারের ভিত্তিতে বণ্টনের নির্দেশ দেন। রায়ে বলা হয়, আমানতের অর্থ নমিনি নয়, আইনসঙ্গত উত্তরাধিকারীরা পাবেন। নমিনি সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাবের হেফাজতকারী মাত্র।
আদালতের ওই ধরনের রায়ের পর অনেক ব্যাংক নতুন হিসাব খোলার সময় নমিনিকে টাকা না-ও দেওয়া হতে পারে-এই মর্মে অঙ্গীকারনামা নেওয়া শুরু করে।
সৃষ্ট জটিলতার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিপত্রে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, কোনো ব্যক্তি মারা গেলে ব্যাংকে রেখে যাওয়া টাকা তাঁর নমিনি (মনোনীত ব্যক্তি) পাবেন। ব্যাংক কোম্পানি আইনের ওই ধারায় বলা হয়েছে, ব্যাংক কোম্পানির কাছে রক্ষিত কোনো আমানত যদি একক ব্যক্তি বা যৌথভাবে একাধিক ব্যক্তির নামে জমা থাকে, তাহলে ওই একক আমানতকারী এককভাবে বা ক্ষেত্রমতো যৌথ আমানতকারী যৌথভাবে নির্ধারিত পদ্ধতিতে এমন এক বা একাধিক ব্যক্তিকে মনোনীত করতে পারবেন। আর আমানতকারীর মৃত্যুর পর আমানতের টাকা মনোনীত ব্যক্তিকে প্রদান করতে হবে।
তবে আদালতের ওই নির্দেশনাটি স্থগিত বা বাতিল হয়েছে কি-না তা জানা যায়নি। ওই আদেশটি বহাল থাকলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিপত্র বাস্তবায়নে নতুন করে আইনী জটিলতা তৈরি হতে পারে বলে আশংকা করছেন অনেকে।