প্রতিবেদক: ক্যান্টিনে খাবার খেতে বসাকে কেন্দ্র করে আবারো সংঘর্ষে জড়িয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগ।
রবিবার দিবাগত রাতে ক্যান্টিনে বসাকে কেন্দ্র করে স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।
এ সময় ক্যান্টিনে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয় এবং দু’গ্রুপের ১৩ জন কর্মী আহত হয়েছে। আহতরা ঢাবি চিকিৎসা কেন্দ্র ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। আহতদের মধ্যে হাফিজুর গ্রুপের কর্মী আল আমিন ও রুবেলের অবস্থা গুরুতর বলে জানান কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী ও শিক্ষার্থীরা জানান, মধ্যাহ্নভোজের সময় হলের ক্যান্টিনে খাবার খেতে বসা নিয়ে হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি হাফিজুর রহমানের অনুসারীদের সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান তুসারের অনুসারীদের মধ্যে বাক বিতন্ডা হয়। এর জের ধরেই রাতের খাবারের সময় সভাপতি হাফিজুরের অনুসারীদের ওপর চড়াও হয় সাধারণ সম্পাদক তাপসের অনুসারী ছাত্রলীগ কর্মীরা। পরে তা সংঘর্ষে রূপ নিলে হলের হাউজ টিউটরদের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শীর জানায়, রবিবার দুপুরে হল ক্যান্টিনে সভাপতি গ্রুপের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ফারুক খাবার খেতে যায়। এসময় খাবার টেবিলে বসার আসন ফাঁকা না পেলে সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের জামিলকে দ্রুত খাবার জন্য বলে। এসময় জামিলের সঙ্গে সভাপতি গ্রুপের ফারুক ও নাহিদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
দুপুরে খাবার টেবিলে কথা কাটাকাটির সূত্র ধরে রাত ৮টার দিকে সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের কর্মীরা নাহিদের উপর চড়াও হয়। পরে অন্য কর্মীরা রড-লাঠি নিয়ে এসে হল ক্যান্টিনে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। সংঘর্ষে দুই গ্রুপের ১৩ জন কর্মী আহত হয়েছে।
সংঘর্ষের সময় হল ক্যান্টিনে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়েছে। মারধর করা হয়েছে দুই ক্যান্টিন বয়কে। এতে ক্যান্টিন বয় মাসুদের হাত ও মহসিনের পা কেটে যায়।
ক্যান্টিন পরিচালক মোহাম্মাদ বাবুল মিয়া বলেন, আমি ২০০১ সাল থেকে এই হলে ক্যান্টিন পরিচালনা করি। আমার ১৭ বছরের অভিজ্ঞতায় এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হইনি। ক্যান্টিনের সব খাবার নষ্ট করা হয়েছে। ৭০টিরও বেশি প্লেট-বাটি ভেঙে চুরমার করা হয়েছে। ক্যান্টিন বয়দের আহত করা হয়েছে। কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ খাবারের মান উন্নত করতে বলেছিল। আমি উন্নত করেছি। এখন আমার কত টাকার ক্ষতি হয়ে গেল। আমাকে কে দেবে?
এ বিষয়ে হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি হাফিজুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি হলের বাইরে ছিলাম। তবে ক্যান্টিনে খাবার খেতে বসার মতো তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে নিজেদের মধ্যে এমন দুর্বৃত্তাচার সত্যিই সংগঠনের জন্য অপমানজনক। আমার গ্রুপের নিরীহ ছেলেদের ওপর নির্মমভাবে হামলা চালিয়েছে যা কখনোই মেনে নেয়া যায় না । ছাত্রলীগ হোক আর সাধারণ শিক্ষার্থী হোক কোনো ঢাবি শিক্ষার্থী অন্য ঢাবি শিক্ষার্থীর গায়ে হাত তোলার অধিকার রাখে না । এ বিষয়ে সাংগঠনিকভাবে সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এ বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান তুসার জানায়, আমি এখন হলের বাইরে। যে কারণে কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান বলেন, এফ রহমান হলের আগের একটি ঘটনার জন্য আমরা কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে ৬ জনকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছি। বিষয়টি এখন কেন্দ্রীয় কমিটির হাতে। আর আজকে যে ঘটনা ঘটেছে তাতেও কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।