1. sardardhaka@yahoo.com : adminmoha : Sardar Dhaka
  2. nafij.moon@gmail.com : Nafij Moon : Nafij Moon
  3. rafiqul@mohajog.com : Rafiqul Islam : Rafiqul Islam
  4. sardar@mohajog.com : Shahjahan Sardar : Shahjahan Sardar
শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩২ পূর্বাহ্ন

কাশ্মীরের সহিংস পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন রাজ্য সরকার

মহাযুগ নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৭
  • ১৩১ বার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারত-শাসিত কাশ্মীরের সহিংস পরিস্থিতি সে রাজ্যের সরকারকে এতোটাই উদ্বেগে ফেলেছে যে মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে রবিবার দেখা করে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।

পরে সাংবাদিকদের মুখ্যমন্ত্রী জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর সময়ে যেভাবে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে সংলাপ শুরু করা হয়েছিল সেখান থেকেই আবার কাশ্মীরকে কাছে টানার প্রক্রিয়া শুরু করা দরকার।

তবে কাশ্মীরের রাজনীতিবিদ ও সাবেক সেনা কর্মকর্তারা অনেকেই মনে করছেন, কাশ্মীরে যে কঠোর দমন নীতি নিয়ে ভারত সরকার এগোতে চাইছে তাতে সাফল্য আসা প্রায় অসম্ভব।

গত বছরের জুলাই থেকে টানা বেশ কয়েক মাস ধরে কাশ্মীরে চরম অস্থিরতা চলার পর উপত্যকার পরিস্থিতি শীতে কিছুটা শান্ত ছিল, কিন্তু গত দু’মাস ধরে সেখানে সহিংসতা আবার চরমে উঠেছে।

রোজই নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া হচ্ছে, পুলিশ কর্মী থেকে রাজনীতিবিদ সমানে আক্রান্ত হচ্ছেন, সাম্প্রতিক উপনির্বাচনে ভোট পড়েছে মাত্র সাত শতাংশ। ভোটের সময় স্কুল জ্বালিয়ে দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে, বাধ্য হয়ে পিছিয়ে দিতে হয়েছে ভোট।

এই পটভূমিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি বলেছেন, পরিস্থিতি শোধরাতে শিক্ষা নিতে হবে বাজপেয়ীর আমল থেকেই।

তিনি বলেন, ‘অটল বিহারী বাজপেয়ী যেখানে ছেড়ে গিয়েছিলেন সেখান থেকে শুরু করতে না পারলে জম্মু-কাশ্মীরের হাল কোনোদিনই শোধরাবে না। তবে তার আগে আমাকে একটু অবস্থা সামলে নিতে দিন – কারণ এই পাথর ও বুলেটের পরিবেশে আলোচনা সম্ভব নয়!’

বাজপেয়ীর পথে ফিরে যাওয়া বলতে মুখ্যমন্ত্রী সংলাপ শুরু করার কথাই বলতে চেয়েছেন – যাতে তিনি হুরিয়তের মতো বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদেরও সামিল করতে চান। তবে কেন্দ্রের তাতে সায় আছে, এখনো এমন কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি।

কাশ্মীরের কুলগাম কেন্দ্রের এমএলএ ও সিপিএম নেতা ইউসুফ তারিগামিও মনে করেন, কাশ্মীর সমস্যার সমাধানে কেন্দ্রের মানসিকতাতেই মৌলিক ত্রুটি আছে।

তিনি বলেছেন, ‘পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুতর, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ভারত সরকারের দিক থেকে আমরা একমাত্র যে প্রতিক্রিয়া দেখছি, সেটা দমন-নীতির, সেটা পেলেট-বন্দুকের। রাজনৈতিক সমাধানের কোনো চেষ্টা দেখা যাচ্ছে না।’

পরিস্থিতি আরো জটিল করে তুলেছে একজন কাশ্মীরিকে সেনাবাহিনীর মানব-ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার ভিডিও।

ভিডিওতে দেখা যায়, কাশ্মীরি এক ছাত্রকে সেনাবাহিনীর জিপের সামনে বেঁধে ভারতীয় সৈন্যরা টহল দিচ্ছে যাতে আন্দোলনকারীরা তাদেরকে লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়ে মারতে না পারে।

মেহবুবা মুফতিও সেনাপ্রধানের কাছে এই ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন।

কাশ্মীরে সাবেক সেনা-কমান্ডার লে: জেনারেল এইচ এস পনাগের বলতে দ্বিধা নেই যে এই ধরনের একটা ছবি তাদের বহু বছরের অর্জনকে ম্লান করে দিচ্ছে।

তিনি বলেছেন, ‘ভারতীয় সেনা এতোদিন সফলভাবে জঙ্গীবাদের মোকাবিলা করে এসেছে। জঙ্গীবাদের সমাধান খোঁজা আমাদের কাজ নয় – শুধু মোকাবিলা করাই কাজ। এর সমাধান সব সময় রাজনৈতিকই হতে হয়। আর জঙ্গিদের মোকাবিলায় আমরা সফল হয়েছিলাম কারণ জঙ্গি বা সন্ত্রাসবাদীদের নিশানা করলেও ভারতীয় সেনা সব সময় বেসামরিক জনতার বন্ধু ছিল।’

সেই বন্ধুত্ব যে আর ছিটেফোঁটাও অবশিষ্ট নেই – তা কাশ্মীরের পথেঘাটে রোজই দেখা যাচ্ছে।

মেহবুবা মুফতি অবশ্য এখনো মনে করেন, সংলাপের মাধ্যমে উপত্যকার পরিবেশ পাল্টে দেয়া সম্ভব।

তার যুক্তি, ‘আলোচনার মাধ্যমেই মুজফফরাবাদ বা রাউলাকোটের রাস্তা খুলেছে, আলোচনার মাধ্যমেই বাজপেয়ীজির সময়ে সীমান্তে যুদ্ধবিরতি সম্ভব হয়েছে। এমনকি আলোচনা হয়েছে হুরিয়তের সঙ্গেও।’

সব পক্ষের জন্য আলোচনা শুরু করার জন্য তিনি জোরালো তাগাদা দিয়ে গেলেও নরেন্দ্র মোদী তাতে সাড়া দেবেন কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়।

তবে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে কাশ্মীরি ছাত্র বা পেশাদারদের হেনস্থা করা হচ্ছে বলে যে অভিযোগ উঠছে, তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী সব মুখ্যমন্ত্রীকেই জরুরি নির্দেশ দিয়েছেন।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

এ জাতীয় আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2023 Mohajog