প্রতিবেদক: রাজশাহী মহানগর পুলিশের অফিসার্স মেসে নিহত সহকারী কমিশনার (এসি) সরফরাজের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পর্ন্ন হয়েছে।তদন্তে হত্যার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে এমন কথা জানানো হয়েছে।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের মর্গে এসি সরফরাজের লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়। রবিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর প্রায় ১২টা পর্যন্ত লাশের ময়নাতদন্ত চলে।
বারিন্দ মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক মনসুর রহমানকে প্রধান করে এই মেডিকেল দল গঠন করা হয়। দলের অন্য দুই সদস্য হলেন- রাজশাহী মেডি্ক্যাল কলেজের সহকারী অধ্যাপক এনামুল হক ও ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক এমদাদুর রহমান।
ময়নাতদন্ত শেষে দলের প্রধান মনসুর রহমান বলেন, ‘সন্দেহভাজন দিকের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য সব আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। যেমন- পাকস্থলিতে বিষ আছে কি না, কোনো ড্রাগস ছিল কি না- এগুলো জানতে ভিসেরা সংগ্রহ করা হয়েছে। রক্ত নেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনেই সব ফলাফল জানানো হবে।’
হত্যার কোনো আলামত পেয়েছেন কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে অধ্যাপক মনসুর রহমান বলেন, ‘না’ তাহলে এটা হত্যার দিকে যাবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কখনোই নয়।’ তবে লাশের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনেই সবকিছু স্পষ্ট করে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন এই চিকিৎসক।
শনিবার সকালে আরএমপির অফিসার্স মেসের নিচতলার একটি কক্ষে এসি সরফরাজের লাশ দেখতে পান সহকর্মীরা। জানালার গ্রিলের সঙ্গে গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় তার লাশ ছিল। বিকেলে পরিবারের সদস্যরা সেখানে গেলে ঘরের দরজা ভেঙে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর লাশ রামেক হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছিল।
এসি সরফরাজ ৩১তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। মৃত্যুর আগে তিনি আরএমপির রাজপাড়া থানা জোনের এসি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার বাবা এম ওবাইদুল্লাহ আরএমপির কমিশনার ছিলেন। তাদের গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার বাবুপুরে।
এদিকে শনিবার ময়নাতদন্তের পর লাশ আবারো পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর তার লাশ নেওয়া হয় রাজশাহী মহানগর পুলিশ লাইনে। সেখানে প্রথম জানাজা শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বিকেলে নগরীর টিকাপাড়া গোরস্থানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পুলিশের এই কর্মকর্তাকে দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন তার নিকটাত্মীয়রা।
রাজপাড়া থানার কর্তব্যরত অফিসার তসলিমা খাতুন জানিয়েছেন, এসি সরফরাজের মৃত্যুর ঘটনায় এই থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। শুক্রবার রাতে মামলাটি দায়ের হয়। সংবাদদাতা হিসেবে এসি সরফরাজের বাবা পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি এম ওবাইদুল্লাহর নাম রয়েছে। শনিবার বিকেলে এম ওবায়দুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘সরফরাজের আত্মহত্যার কোনো কারণ নেই।’