প্রতিবেদক: সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে বাঁধ নির্মাণে কারো কোনো গাফলতি প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, পরবর্তী ফসল না ওঠা পর্যন্ত ভিজিএফের মাধ্যমে সবাইকে খাবার সরবরাহ করা হবে।
এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের সার-বীজসহ সকল কৃষি উপকরণ বিনামূল্যে দেয়া হবে বলে ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হাওরের ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ওএমএস ডিলার নিয়োগ দিতে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতি নির্দেশ দেন।
রবিবার হাওরাঞ্চলের দুর্গত এলাকা পরিদর্শন ও ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করতে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় সুধী সমাবেশে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টার যোগে সকাল ৯টায় গণভবন থেকে সুনামগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হলে ১০টার দিকে সুনামগঞ্জে পৌঁছায়।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তার সফরকে কেন্দ্র করে কঠোর নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে হাওর এলাকা শাল্লাকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে।
শেখ হাসিনা জানান, হাওরের বন্যাকবলিত এলাকায় বিতরণের জন্য তিন হাজার ৫২৪ মেট্রিক টন চাল এবং নগদ ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকায় প্রতি পরিবারকে মাসে ৫০০ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে।
যেসব বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা হাওর অঞ্চলে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে, তাদের আপাতত কিস্তি আদায় স্থগিত করে সুদ মওকুফের আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী হাওর এলাকার মানুষকে শুধু ফসলের ওপর নির্ভরশীল না থেকে মাছ, গবাদীপশু ও হাঁস-মুরগি পালন বাড়ানোরও পরামর্শ দেন।
হাওরের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের নাব্যতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, খালগুলো যেন বেশি পানি নিষ্কাশন করতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে। হাওরকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
“প্রকৃতির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে,প্রকৃতিকে কাজে লাগাতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করেই এগিয়ে যেতে হবে।হাওরের সম্ভাবনাকেও আমাদের কাজে লাগাতে হবে।”
হাওর এলাকা পরিদর্শন শেষে বিকালেই প্রধানমন্ত্রীর ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, কয়েক দিনের টানা মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ফলে আকস্মিক বন্যায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ফলে এলাকার উঠতি বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। হাজার হাজার কৃষকের জীবিকা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
বন্যায় সুনামগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নেত্রকোনা ও ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।