প্রতিবেদক: আগামী (২০১৭-১৮) অর্থবছরের বাজেটে পর্যটন ও এভিয়েশন খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে এ খাতের উদ্যোক্তারা। পাশাপাশি বরাদ্দকৃত অর্থ সময়মতো ছাড় দেওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
বুধবার রাজধানীর মহাখালীর অবকাশ হোটেলে পর্যটনখাত সংশ্লিষ্টদের প্রাক-বাজেট আলোচনায় তারা এ প্রস্তাব করেন। আলোচনার আয়োজন করে এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (এটিজেএফবি)।
এসময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন পর্যটন খাতে বরাদ্দ বাড়াতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, আমরা এই খাতে এমন কিছু করতে পারিনি যে, সরকার পর্যটন খাতকে বেশি গুরুত্ব দেবে। তবে গত কয়েক বছরে এ খাত অনেক দূর এগিয়েছে।আলোচনা সভায় পর্যটন সংস্থাগুলোর জন্য করমুক্ত যানবাহন আমদানির অনুমোদন, ট্যুর অপারেটরদের সম্মানজনকহারে প্রণোদনা, করনেটের মাধ্যমে ক্রস বর্ডার ট্যুরিজম সেবা দেওয়া এবং ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের বিশেষ বিবেচনায় ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ পাঠানোর নিশ্চয়তাসহ বেশকিছু দাবি তুলে ধরা হয়।
তিনি বলেন, পর্যটন খাতে প্রণোদনা প্রয়োজন। এজন্য আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করবো। এভিয়েশন খাতে জ্বালানি তেলের মূল্য নিয়ে আমরা অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছিলাম। জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করা প্রয়োজন। সার চার্জ ও ল্যান্ডিং চার্জ নিয়ে কাজ চলছে। পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীদের ট্যুরিজম অ্যাওয়ার্ড দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় নিয়ে অনেকের ভুল ধারণা রয়েছে। আমরা বরাদ্দ ঠিক করি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে। আমাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দকৃত অর্থ ছাড়ের জন্য আটকে থাকে, এমন ধারণা ভুল। পর্যটনখাতে শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির বিষয়টি আমরা বিবেচনা করবো।
সভায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রাণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ফারুক খান বলেন, ট্যাক্সের ক্ষেত্রে সমন্বয়ের প্রয়োজন রয়েছে। আমাদের পর্যটন খাতকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। পর্যটন খাতে প্রণোদনা দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। পর্যটন খাতে শুল্কমুক্ত গাড়ির সুবিধা দেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীদের অ্যাওয়ার্ড ও সিআইপি ঘোষণার উদ্যোগ নেওয়ার যেতে পারে। এর মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা উৎসাহী হবেন।
বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন বলেন, আমরা এখনো কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে যেতে পারিনি। তবে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এ খাতের জন্য ট্যাক্স হলিডেসহ আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে যারা বিদেশি পর্যটক নিয়ে আসেন তাদের জন্য বিশেষ ট্যাক্স ছাড়ের উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে, এতে এখাতের সঙ্গে সম্পৃক্তরা উৎসাহ পাবেন।
পর্যটন খাতের বরাদ্দকৃত অর্থ সময়মতো ছাড় দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান বাংলাদেশ পর্যটন কপোর্রেশনের চেয়ারম্যান ড.অপরূপ চৌধুরী।
নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, আমাদের দেশে বিমান খাতে সমস্যার অন্ত নেই। বিশেষ করে উড়োজাহাজের জ্বালানি তেলে দামের মূল্য অতিরিক্ত। অথচ আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশে আমাদের চেয়ে কম মূল্যে জ্বালানি তেল পাওয়া যায়। অতিরিক্তি মূল্যের জন্য বিদেশি এয়ারলাইন্সের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। দেশি এয়ারলাইন্সগুলোর জন্য সরকারের আরও বেশি সহায়তা প্রয়োজন।
এটিজেএফবির সভাপতি নাদিরা কিরণের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন টোয়াব সভাপতি তৌফিক উদ্দিন, অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্ট অব বাংলাদেশ (আটাব) সভাপতি এসএন মঞ্জুর মোর্শেদ, মহাসচিব আব্দুস সালাম, মনিটর সম্পাদক ওয়াহিদুল আলম ও এটিজেএফবি’র সাধারণ সম্পাদক তানজিম আনোয়ার, পর্যটন বিচিত্রার সম্পাদক মহিউদ্দিন হেলাল প্রমুখ।