প্রতিবেদক : বিলাসবহুল গাড়িতে শুল্ক ফাঁকি ও মুদ্রাপাচারের অভিযোগের মুখে থাকা বিতর্কিত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসের শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়েছেন। রোববার বিকাল ৩টার দিকে তিনি রাজধানীর কাকরাইলের সদর দপ্তরে হাজির হন বলে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের মহাপরিচালক মইনুল খান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “শুল্ক ফাঁকি ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে তলবের জবাবে তিনি হাজির হয়েছেন। দুই সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।”
গত ২১ মার্চ শুল্ক গোয়েন্দার দল মুসার গুলশানের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিলাসবহুল ‘রেন্জ রোভার’ জব্দ করে। জনৈক ফারুক উজ-জামান চৌধুরীর নামে নিবন্ধিত শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা গাড়িটি মুসা বিন শমসের নিজেই ব্যবহার করে আসছিলেন বলে শুল্ক গোয়েন্দাদের অভিযোগ।
এঘটনা তদন্তে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের উপপরিচালক এইচ এম শরিফুল হাসানের নেতৃত্বে দুই সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি গত ২০ এপ্রিল মুসা বিন শমসেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে।
কিন্তু ‘আংশিক পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে বাকশক্তি হারিয়েছেন’ দাবি করে সময় চাইলে তাকে ১৫ দিনের সময় দিয়ে ৭ মের মধ্যে হাজির হতে সমন দেওয়া হয়।
মুসা বিন শমসেরের সম্পদ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনও তদন্ত চালাচ্ছে।
১৯৫০ সালের ১৫ অক্টোবর ফরিদপুরে জন্ম নেওয়া মুসা ড্যাটকো গ্রুপের মাধ্যমে জনশক্তি রপ্তানির ব্যবসা শুরু করেন। তবে তার পরিচিতি তুলে ধরতে গিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো অস্ত্র ব্যবসার কথাই আগে আনে।
১৯৯৭ সালে যুক্তরাজ্যে নির্বাচনে লেবার পার্টির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী টনি ব্লেয়ারের নির্বাচনী প্রচারের জন্য ৫ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে আলোচনায় আসেন বাংলাদেশের এই ব্যবসায়ী।
একটি দৈনিকে সুইস ব্যাংকে মুসা বিন শমসেরের ৫১ হাজার কোটি টাকা থাকার খবর ছাপা হয়েছিল। তবে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদের পর গত বছর মুসা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বাংলাদেশে বসে কেউ এত অর্থ উপার্জন করতে পারবে না।
মুসার বিরুদ্ধে একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহায়তা করার অভিযোগও রয়েছে, যার অনুসন্ধান করছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
সম্প্রতি তার ‘যুদ্ধাপরাধের তথ্য’ সম্বলিত নথি তদন্ত সংস্থার কাছে হস্তান্তর করেছেন সাংবাদিক সাগর লোহানী ও প্রবীর সিকদার। তবে মুসার দাবি, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে বন্দি ছিলেন তিনি।