প্রতিবেদক: ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বাজরাপুরে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়ি ঘিরে রেখেছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিসিটিসি) ইউনিটের সদস্যরা।
পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক গোলাগুলির সময় ঐ বাড়িতে আত্মঘাতী হামলায় ২ জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান।
জেলার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, রোববার ভোর থেকে এই অভিযানের মধ্যে ওই বাড়ি থেকে বোমা ছোড়া হলে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একজন কর্মকর্তাসহ দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
জেলা পুলিশ ও পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা শনিবার রাতে উপজেলার এসবিকে ইউনিয়নে বজ্রাপুর গ্রামে একতলা একটি টিনশেড বাড়ি ঘিরে ফেলে।
রোববার ভোরে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা সেখানে অভিযান শুরু করে। গোলাগুলির মধ্যে বাড়ির ভেতর থেকে বোমা ছোড়া হয় বলে পুলিশ সুপার জানান।
তিনি বলেন, “বাড়ির ঠিক বাইরে একজনের গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে আছে। ভেতরে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আরও একজন নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।”
ওই বাড়ির মালিক জহুরুল ইসলাম, তার ছেলে জসিম এবং আলম ও আরিফ নামের আরও দুইজনকে ওই এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের এডিসি নাজমুল ইসলাম এবং জেলা পুলিশের এসআই মহসীন আলীকে আহত অবস্থায় যশোরের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ সুপার জানান।
নিরাপত্তার কারণে ওই বাড়ির আশপাশের এলাকায় সকাল থেকে ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। মাইকে ঘোষণা দিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে।
কাছেই একটি মাঠে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স এনে রাখা হয়েছে। সাংবাদিকদের ওই বাড়ির কাছে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।
এদিকে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার লেবুতলায় সরাফত নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধীন আরেকটি বাড়ি শনিবার রাত থেকে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রেখেছে পুলিশ।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের এডিসি সাইফুল ইসলাম জানান, ওই বাড়িতে বিস্ফোরক রয়েছে বলে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে।
সদর থানার একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, লেবুতলার ওই জঙ্গি আস্তানার খবর পেয়েই কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অভিযান শুরু হয়েছিল। ওই বাড়ি ঘিরে ফেলার পর তারা মহেশপুরের আস্তানার খবর পান এবং সেখানে অভিযান শুরু হয়।
সদর থানার ওসি হরেন্দনাথ সরকার বলেন, “আমরা বাড়িটি ঘিরে রেখেছি। বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল এলে পরে ভেতরে অভিযান চালানো হবে।”
এর আগে এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামে আব্দুল্লাহ নামে ধর্মান্তরিত এক ব্যক্তির বাড়ি ঘিরে অভিযান চালায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
দুই দিনের অভিযান শেষে ওই জঙ্গি আস্তানা থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হলেও সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি।
ওই অভিযানের এক সপ্তাহের মাথায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের আরেক জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পাওয়া যায়।
সেখানে সোয়াটের ‘অপারেশন ঈগল হান্ট’ শেষে গত ২৭ এপ্রিল চারজনের লাশ পাওয়া যায়, যারা নিজেদের ঘটানো বিস্ফোরণে নিহত হন বলে পুলিশের ভাষ্য।