প্রতিবেদক: নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাবিধি প্রণয়ন না হওয়ার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আপিল বিভাগ।শৃঙ্খলাবিধি প্রণয়নে সরকারকে আরো এক সপ্তাহ সময় দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
সোমবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা নেতৃত্বাধানী পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ এ সময় মঞ্জুর করেন। অসন্তোষ প্রকাশ করে আদালত বলেন, নিউ ইয়র্ক থেকে টোকিওর দূরত্ব কত? সুপ্রিম কোর্ট থেকে গণভবন এবং বঙ্গভবনের দূরত্ব তার চেয়েও বেশি।
এর আগে বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশ করতে বেশ কয়েকবার সময় নিয়েছে সরকার। সর্বশেষ গত ৪ এপ্রিল গেজেট প্রকাশের জন্য আজকের দিন পর্যন্ত সময় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ।
গত ১১ ডিসেম্বর আইন মন্ত্রণালয় থেকে এক নোটিশে জানানো হয়, নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা-সংক্রান্ত বিধিমালার গেজেট প্রকাশের প্রয়োজন নেই বলে রাষ্ট্রপতি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। ২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ গেজেট প্রকাশ করতে রাষ্ট্রপক্ষকে এক সপ্তাহ সময় দেন।
এরপর নির্ধারিত তারিখেও গেজেট প্রণয়ন না হওয়ায় ৮ ডিসেম্বর আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিবকে তলব করে আদালত। এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা ২ জানুয়ারি আদালতে হাজির হন।
ইতোমধ্যে সরকার যে রুলস তৈরি করে পাঠিয়েছে তা সুপ্রিম কোর্টের কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। কারণ মাসদার হোসেন মামলার রায়ের ১২ দফার মধ্যে ৭ম দফায় বলা আছে, বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য যে রুলস ফ্রেম করা হবে, তাতে শাসন বিভাগের চেয়ে বিচার বিভাগের মতামত প্রাধান্য পাবে।
১২ দফার মধ্যে ইতোমধ্যে বেশ কয়েক দফা বাস্তবায়ন করেছে সরকার। এ জন্য বারবার আদেশ দিতে হয়েছে আপিল বিভাগকে। এমনকি ২০০৪ সালে আদালত অবমাননার মামলাও করতে হয়েছে বাদীপক্ষকে। এরপর ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক ঘোষণা করে।
এ অবস্থায় ২০১৫ সালের ১৫ মার্চ আপিল বিভাগ চার সপ্তাহ সময় দেন সরকারকে। এরপর গত বছরের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় থেকে একটি খসড়া শৃংখলাবিধি তৈরি করে সুপ্রিম কোর্টে পাঠায়। কিন্তু তা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের আলোকে না হওয়ায় সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃপক্ষ একটি কমিটি গঠন করে আলাদা একটি শৃংখলাবিধি তৈরি করেন। গত ২ জানুয়ারি সোমবার এ বিষয়ে আপিল বিভাগে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।