1. sardardhaka@yahoo.com : adminmoha : Sardar Dhaka
  2. nafij.moon@gmail.com : Nafij Moon : Nafij Moon
  3. rafiqul@mohajog.com : Rafiqul Islam : Rafiqul Islam
  4. sardar@mohajog.com : Shahjahan Sardar : Shahjahan Sardar
সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৮ পূর্বাহ্ন

ম্যানচেষ্টার হামলা : শান্ত প্রকৃতির সালমানই আত্মঘাতী বোমারু

মহাযুগ নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২৪ মে, ২০১৭
  • ১৭৩ বার

ডেস্ক: ম্যানচেষ্টারে আত্মঘাতী বোমা হামলাকারি সালমান রামাদান আবেদি ব্যবসার ওপর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনা শেষ না করেই আত্মঘাতি জঙ্গি হয়ে ওঠে। ব্রিটেনে লিবিয়ার এক মুসলিম পরিবারে জন্ম নেয় সালমান। গত কয়েক বছর ধরে সম্প্রতি সে উগ্রমতবাদের প্রতি ঝুঁকে পড়ে বলে ব্রিটিশ সিকিউরিটি সার্ভিস ও ফিনান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে।

২২ বছরের তরুণ আবেদি নামাজ পড়ত ও তার পিতা বেশ পরিচিত ব্যক্তি হিসেবে সবাইকে নামাজের আহবান জানাতেন। শৈশব থেকে ব্রিটেনেই বড় হয়ে ওঠে সালমান। টেলিগ্রাফ বলছে, তার পরিবার দক্ষিণ ম্যানচেষ্টারের ফ্যালোফিল্ড এলাকায় গত ১০ বছর ধরে বসবাস করে আসছে। পুলিশ ইতিমধ্যে সালমানদের বাড়িতে তল্লাশী চালিয়েছে।

ম্যানচেষ্টারে হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ আরেক ২৩ বছরের এক তরুণকে গ্রেফতার করেছে। ফ্যালোফিল্ড এলাকার বাসিন্দা পিটার জোন্স (৫৩) জানান তাদের এলাকা বেশ শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ হিসেবেই পরিচিত। জোন্স বিস্ময়বোধ করে বলেন, অবাক হয়েছি জেনে যে তাদের এলাকা থেকেই সালমান এধরনের আত্মঘাতী বোমা হামলা ঘটিয়েছে।

মিডিয়া বলছে, ইতিমধ্যে সালমানের পরিবার লিবিয়ায় পালিয়ে গেছে। বিবিসি বলছে, ব্রিটেনে ১৬ হাজার লিবিয় নাগরিক বাস করছে। এসব লিবিয় নাগরিক ম্যানচেষ্টারের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ। রিপোর্টাররা বলছেন, সালমান তার পিতার ৪ সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয়তম। তার আরো একটি ভাই ও বোন আছে। গার্ডিয়ানের কাছে ম্যানচেষ্টারের লিবিয় কম্যুনিটির এক সদস্য বলেছেন, সালমান খুবই শান্ত স্বভাবের এবং সবসময় তার সঙ্গে সন্মানজনক আচরণ করত। তার ভাই ইসমাইল বর্হিমুখী স্বভাবের হলেও সালমান খুবই শান্ত প্রকৃতির এবং তার মত ছেলে এধরনের আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী হতে পারে যা খুবই বেমানান।

টাইমস বলছে, ব্রিটিশ নাগরিক সালমান সম্প্রতি লিবিয়া থেকে ব্রিটেনে ফিরে আসে, তিন সপ্তাহ আগে সালমান লিবিয়া গেলেও দিন কয়েক ধরে সে ম্যানচেষ্টারে অবস্থান করছিল।

পুলিশ এখন খতিয়ে দেখছে সালমানের সঙ্গে এ বোমা হামলার সঙ্গে আর কারা জড়িত আছে। কিংবা সালমান একাই এ আত্মঘাতী বোমা হামলা ঘটিয়েছে না কি সে কোনো বড় ধরনের জঙ্গি নেটওয়ার্কের অংশ হয়ে এ হামলা করেছে।

ম্যানচেষ্টারে সালমানের পরিবার ডিডসবারি মসজিদের সঙ্গে ঘটিষ্টভাবে সংশ্লিষ্ট এবং ১৯৬৭ সালে সিরিয় আরব কমিউনিটি মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করে। তার আগে এটি ভিক্টোরিয়ান খ্রিস্টান উপসানালয় ছিল। সালমানের বাবা রামাদান নামাজের জন্যে আহবান জানাতেন এবং ভাই ইসমাইল স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতেন। এক মুরুব্বী মোহাম্মদ সাইদ যিনি ওই মসজিদে নিয়মিত যান তিনি গার্ডিয়ানকে বলেন, একবার সন্ত্রাসের বিরোধিতা করে ধর্মীয় বক্তব্য দেওয়ার সময় সালমান তাকে বাধা দেন। সালমান আমার প্রতি ঘৃণা ও অবজ্ঞার সাথে তাকায়। তার এ আচরণ আমাকে ব্যথিত করেছিল।

প্রেস এ্যাসোসিয়েশন নিউজ এজেন্সি জানায়, সালমান ব্যবসা ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ম্যানচেষ্টারে স্যালফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়তে শুরু করেন ২০১৪ সালে। কিন্তু দুই বছর পর সে পড়াশুনা বাদ দেয় এবং এরপর আর তা শেষ করেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে সালমান সরব ছিল না, কোনো ধরনের ঝামেলা তৈরি করেনি, কোনো সামাজিক কাজেও অংশ নেয়নি। তবে ইউনিভার্সিটির আবাসিক ইমামের সঙ্গে সালমান কখনো দেখা করেননি।

ইন্ডিপেনডেন্ট বলছে, সালমান একবার জঙ্গিদের জন্যে অর্থ সংগ্রহের দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিল। তার জন্ম ১৯৯৪ সালে। তার মায়ের নাম সামিয়া তাব্বাল (৫০) এবং পিতা রামাদান আবেদি নিরাপত্তা কর্মকর্তা। সালমানের পিতা-মাতা দুজনেই ত্রিপোলিতে জন্মগ্রহণ করেন। পরে লন্ডনে অভিবাসী হয়ে আসেন। ধারণা করা হচ্ছে লিবিয়ান ইসলামিক ফাইটিং গ্রুপের সঙ্গে সালমানের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

ম্যানচেষ্টারের এলসমোর সড়কে সালমানদের বাড়ি লাল ইটের ছাদ হলেও বর্ণহীন। পড়শিরা জানায়, কিভাবে সালমান ক্রমান্বয়ে ধর্মের দিকে ঝুঁকে পড়ে। ২১ বছরের লিনা আহমেদ জানান, লিবিয় ওই পরিবারের সন্তান সালমান কয়েক মাস আগে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাবার সময় উচ্চারণ করে কালেমা পাঠ করছিল। আরবিতে সে উচ্চস্বরে কথা বলত।

তাদের এক পারিবারিক বন্ধু ৫২ বছরের এ্যালান কিনসে জানান, সালমানরা খুব ধার্মিক ছিল। বিভিন্ন ধরনের মানুষ তাদের বাসায় যাতায়াত করত। এ্যালান পেশায় গাড়ি সরবরাহকারী এক চালক। তার স্ত্রী ৪৮ বছরের ফ্রান্সেস জানান, সালমানদের বাসায় অনেক পতাকা ছিল, সম্ভবত ইরাক বা লিবিয়ার হবে, জানালা দিয়ে সেগুলো দেখা যেত। আমরা মনে করতাম তারা কোনো ফুটবল দলের সমর্থক বা প্রতিবাদ জানাতে পতাকাগুলো ব্যবহার করছে।

ম্যানচেষ্টার হামলার পর দুটি হেলিকপ্টার, রায়ট গাড়ি, ঢাল ও অস্ত্রশস্ত্র সহ ৩০ জন পুলিশ সালমানদের বাড়ি ঘিরে ফেলে। তারা বিস্ফোরক দিয়ে বাড়িটির দরজা উড়িয়ে দেয়। কিনসে জানান, মনে হচ্ছিল যুদ্ধক্ষেত্র। পুরো অভিযান শেষ হয় ৯০ সেকেন্ডের মধ্যে। তবে বাড়িতে সম্ভবত কেউ ছিল না।

আরিয়ানা গ্রান্ডের কনসার্টে আত্মঘাতী বোমা হামলার সময় সালমান ইমপ্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস ব্যবহার করে যা ধাতব বস্তুতে মোড়ানো ছিল, যা ভয়ঙ্কর ধরনের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তাকে সহ অনেকের প্রাণহানি ঘটায়। গোয়েন্দাদের উদ্ধারকৃত সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে সালমান ওই ডিভাইস একটি স্যুটকেসে করে নিয়ে যায় এবং তা কনসার্টস্থলে মাটিতে রেখে বিস্ফোরণ ঘটায়।

এ জাতীয় আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2023 Mohajog