প্রতিবেদক: রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি পূরণে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট থেকে দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের সমালোচনা করে এর জন্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের পদত্যাগ দাবি করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে বাজেট প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় মুহিতের বিরুদ্ধে ‘ফৌজদারি অভিযোগ’ দায়ের করারও দাবি তুলেছেন তিনি।
বাবলু বলেন, “ট্যাক্স পেয়ারের দুই হাজার কোটি টাকা উনি ব্যাংকিং খাতের ঘাটতি পূরণে দিচ্ছেন। মানুষের টাকা দিয়ে লুটপাটের টাকা পূরণ করছেন। এটা কোনো নৈতিকতার মধ্যে পড়ে না। এটা অনৈতিক কাজ। উনি নৈতিকতা ও আইনবিরোধী প্রস্তাব কীভাবে করেন?”
‘লুটের টাকার ঘাটতি’ পূরণে করদাতাদের দেওয়া অর্থ খরচের অধিকার অর্থমন্ত্রীর নেই মন্তব্য করে বাবলু বলেন, “এর জন্য তো উনাকে আইনের আওতায় আনতে হবে।অর্থমন্ত্রীকে এ জন্য আইনের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। উনার বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল চার্জ আনা উচিত বলে আমি মনে করি।”
মুহিতের উদ্দেশে বিরোধী দলের এই সংসদ সদস্য বলেন, “আপনি বিদায় নিন। পদত্যাগ করুন। সম্মানের সাথে বিদায় নিন। আপনার অনেক বয়স হয়েছে। আপনাকে সম্মান করি। বিদায় নিয়ে ষোল কোটি মানুষকে মুক্তি দিন।”
সংবাদ মাধ্যমে আসা তথ্য অনুযায়ী, মূলধন ঘাটতি পূরণ, তহবিল সহায়তা, সুদ ভর্তুকি ও সরকারি শেয়ারের অংশ ঠিক রাখতে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের ‘ব্যাংকের মূলধন পুনর্গঠনে বিনিয়োগ’ খাতের বরাদ্দ থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ওই অর্থ দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে সোনালী, রূপালী ও বেসিক ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি পূরণে দেওয়া হয়েছে এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ৭০ শতাংশ।
দুর্নীতি ও ঋণ জালিয়াতির কারণে দুর্দশায় থাকা ব্যাংকগুলোকে এভাবে মূলধন জোগানো নিয়ে বিভিন্ন মহলের সমালোচনা রয়েছে।
জিয়াউদ্দিন বাবলু সংসদে বলেন, “এ ধরনের প্রস্তাব কোনোভাবেই উনি (অর্থমন্ত্রী) করতে পারেন না। এ টাকা উনি শিক্ষা-স্বাস্থ্য বা অন্য কোনো খাতে দিতে পারতেন। কেন আপনি দুই হাজার কোটি টাকা ব্যাংকের মূলধন পুনর্গঠনের দেবেন?
“আগের তিন অর্থ বছরও আপনি টাকা দিয়েছেন। সরকার তাদেরকে টাকা দিতে যাবে কেন? অর্থমন্ত্রীর এই টাকা দেওয়ার কোনো অধিকার নেই।”
ব্যাংক খাতে ব্যাপক লুটপাটের অভিযোগ এনে বাবলু বলেন, ব্যাংকগুলোকে ‘অক্সিজেন দিয়ে’ রাখা হয়েছে।
“ব্যাংকগুলোকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে আসা হয়েছে। খেলাপি ঋণে ব্যাংকগুলো দেউলিয়া হয়ে আছে। এর মধ্যে ঋণ অবলোপন করা হয়েছে। কার টাকা অবলোপন করছেন? মানুষের টাকা লুট হচ্ছে, বিদেশে পাচার হচ্ছে। এসব নিয়ে অর্থমন্ত্রীর কোনো বক্তব্য নেই।”