প্রতিবেদক : আমদানি-রপ্তানির সুবিধার্থে চট্টগ্রামের কাস্টমস হাউজ ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সচিবালয়ে রোববার সচিব সভায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশ দেন বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) এন এম জিয়াউল আলম সাংবাদিকদের জানান।
মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে রোববার সকাল সোয়া ১০টা থেকে দুপুর সোয়া ২টা পর্যন্ত সচিবদের সঙ্গে সভা করেন প্রধানমন্ত্রী। সভায় উপস্থিত ৭১ জন সচিবের মধ্যে ১৬ জন বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন।
জিয়াউল আলম বলেন, “চট্টগ্রাম স্থল ও নৌ বন্দরে মালামল আমদানি-রপ্তানির কাজে ২৪ ঘণ্টা কাস্টমস স্টেশন খোলা রাখার ব্যবস্থা করতে প্রধানমন্ত্রী অনুশাসন দিয়েছেন।”
সেই সঙ্গে ত্রাণ তৎপরতার জন্য জেলা পর্যায়ে পর্যাপ্ত তহবিল রাখতেও প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান সচিব।
তিনি বলেন, “স্থানীয় চাহিদার ভিত্তিতে এবং জনগণের পশ্চাৎপদতার নিরিখে যেন স্থানীয়ভাবে প্রকল্প গ্রহণ করা হয় সে বিষয়ে একটি অনুশাসন প্রধানমন্ত্রী সচিবদের দিয়েছেন।”
বৃক্ষরোপণ জোরদারের পাশাপাশি উপকূলীয় অঞ্চলে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল গড়ে তুলতেও প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান জিয়াউল আলম।
“যত্রতত্র শিল্প কারখানা স্থাপন না করে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের আওতায় যেন শিল্প কারখানাগুলো গড়ে ওঠে সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগ নিতে বলেছেন।”
এসডিজি বাস্তবায়নে সবাইকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বলেন, যে টার্গেট রয়েছে তার আলোকে সঠিকভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের উপরও জোর দিয়েছেন জানিয়ে জিয়াউল আলম বলেন, “দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ প্রয়োজন, প্রধানমন্ত্রী কোয়ালিটি প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করার কথা বলেছেন।
“এছাড়া অগ্রাধিকার প্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়নে সচিবদের আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করা এবং জঙ্গিবাদ ও মাদকবিরোধী অভিযানে সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।”
জিয়াউল আলম বলেন, নতুন অর্থবছরের প্রথম তিন মাসেই সব প্রকল্পের পেপার ওয়ার্ক শেষ করার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, যাতে বর্ষা মৌসুমের শেষেই প্রকল্পের কাজ শুরু করা যায়।
এছাড়া নতুন ভবন তৈরির ক্ষেত্রে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাখারও নির্দেশনা দেন সরকারপ্রধান।
জিয়াউল আলম বলেন, “হাইওয়ে ও বিভিন্ন রাস্তার পাশে জলাধার রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। রাস্তার পাশে জলাধার থাকলে রাস্তায় পানি জমে না, পানি জমলে রাস্তার ক্ষতি হয়।”
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার প্রেক্ষিতে সচিবরা বৈঠকে তাদের মতামত তুলে ধরেন বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে সচিবদের কোনো চাওয়া-পাওয়া ছিল কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “ফৌজদারি মামলার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সচিবদের মতামত পজিটিভই হয়েছে, সবাই প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনগুলো মেনে চলবেন- সে কথাই বলেছেন। মামলার দীর্ঘসূত্রতা দূর করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।”
সচিবদের গাড়িতে পতাকা ব্যবহার নিয়ে সভায় কোনো আলোচনা হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নে জিয়াউল আলম বলেন, “সচিবদের আলোচনায় বিষয়টি এভাবে আসেনি। তবে প্রধানমন্ত্রীকে হয়ত সেগুলো জানানো হবে।”
জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী কোনো নির্দেশনা দিয়েছেন কি না জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব বলেন, “না এ ধরনের কোনো আলোচনা আসেনি।”
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের নিয়ে মাঝেমধ্যেই সভা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। কিছু সচিব সভায় প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকেন।
গত বছরের ১৭ অক্টোবর সবশেষ সচিব সভা হয়েছিল। ২০১৪ সালের এপ্রিলে সর্বশেষ সচিব সভায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।