ভোলার শাহবাজপুর রাষ্ট্রীয় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন কোম্পানি বাপেক্সের আবিষ্কৃত নতুন গ্যাস ক্ষেত্র থেকে পরীক্ষামূলকভাবে গ্যাস উৎপাদন শুরু হয়েছে।
বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কূপটির প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানির (বাপেক্স) উপপরিচালক জসিমউদ্দিন জানান, কূপটির সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ করা হয়েছে। এখন ওই কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন করে সরবরাহ সম্ভব।
গত ২৩ অক্টোবর নতুন ক্ষেত্রটি আবিষ্কারের খবর প্রথম প্রকাশ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। সেদিন মন্ত্রিসভার নিয়মিত সাপ্তাহিক বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের এই খবর জানান।
কূপ থেকে প্রায় আড়াই হাজার পিএসআই চাপে গ্যাস বেরিয়ে আসছে। এখান থেকে প্রতিদিন ঘণ্টায় ৫০ এমএমসিএফ গ্রাস উত্তোলন করা সম্ভব হবে।
ভোলার শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্র থেকে ২০০৯ সালের ১১ মে গ্যাস উত্তোলন শুরু করে বাপেক্স। সেখানে থাকা চারটি কূপের মধ্যে তিনটি থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস তোলা হচ্ছে বলে বাপেক্স ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য থেকে জানা যায়।
শাহবাজপুরে ৩৫ বিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাস মজুদ রয়েছে বলে বাপেক্সের প্রকৌশলীদের ধারণা। ওই গ্যাসের বিপরীতে ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ৩৫ মেগাওয়াট রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ কয়েকটি মাঝারি শিল্পকারখানার জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। নতুন কূপে গ্যাসের মজুদ নিশ্চিত হলে ফের গ্যাসের জন্য আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের সংযোগ পাওয়ার সুযোগ থাকবে।
ভোলার বোরহানউদ্দিনের কাচিয়া ইউনিয়নে প্রথম ১৯৮৯ সালে গ্যাসের অস্তিত্ব লক্ষ করা যায়। এর দুই বছর পর ১৯৯১ সালে প্রথম কূপ খনন শুরু হয়। বাপেক্স প্রথমে তাদের নিজস্ব প্রযুক্তিতে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নে দুটি কূপ খনন করে।
পরে একই এলাকায় আরো দুটি কূপ খনন করা হয়। যা থেকে বর্তমানে প্রতিদিন ৮০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব।
এ বছর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ১০টি কূপ খননের পরিকল্পনা নেয়া হয়। এর মধ্যে ভোলার মুলাইপত্তনে একটি ও ভেদুরিয়ায় একটি রয়েছে। মুলাইপত্তনের অনুসন্ধান কূপের খননকাজ শুরু হয় ৬ আগস্ট।
রাষ্ট্রায়ত্ত তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ কর্পোরেশনের হিসাব অনুযায়ী, দেশের ২৬টি গ্যাসক্ষেত্রে ২০১৬ সালে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রমাণিত গ্যাসের মজুদ ছিল ১৩ দশমিক ৬০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট।