আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনীতির মাঠ এখন সরগরম। তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে দশম জাতীয় সংসদ নিবাচন বর্জন করা বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। নির্বাচনে অংশ গ্রহণে বিএনপির এবারের দাবি নির্বাচনকালীন সরকার।
বিএনপিকে বাইরে রেখেও দেশে কোনো জাতীয় নির্বাচন হবে না- দলটির নেতাদের এমন অবস্থানের বিপরীতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিএনপির দাবিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না আওয়ামী লীগ। দলটির নেতারা কট্টর সংবিধানে, নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে শেখ হাসিনাই থাকবেন।
দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের কট্টর অবস্থানে পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে এটা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান। আবারো কি জ্বালাও-পোড়াও পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে নাকি উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে সাধারণ নির্বাচন- এ নিয়েও রয়েছে শঙ্কা। বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছে, বিএনপি সহায়ক সরকারের দাবি তুলে আওয়ামী লীগকে চাপে রাখার কৌশল নিয়েছে।
শেষ মুহূর্তে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে শেখ হাসিনাকে মেনে নিতে পারে দলটি। কেননা বিএনপির বিগত আনোদলনগুলোর ব্যর্থতার ভয় দলটিকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। এমনিতেই নেতাদের মাথার উপর শতশত মামলা এর মধ্যে আন্দোলনের ডাক দিলে হইতো গ্রেপ্তার হতে হবে নেতাদের।
তবে শেখ হাসিনাকে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান রাখা হলেও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ সর্তকতার সাথে কাজ করবে বিএনপি। ‘নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপি সরকার গঠন করবে’- এমনও বিশ্বাস দলটির নেতাকর্মীদের।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলের অন্যান্য নেতারও বলছেন আগামী নির্বাচনে অংশ না নিলে নিয়ম অনুযায়ী বিএনপিকে নিবন্ধন হারাতে হবে। সব মিলিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করেই বিএনপিকে সংসদে ফিরতে হবে।
সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া লন্ডন সফর শেষে দেশে ফিরেই নিয়মিত মামলার হাজিরাসহ রাজনৈতিক কর্মককাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন। রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে গিয়ে খালেদা জিয়া চট্রগ্রাম বিভাগে এক ধরণের রোডমার্চ করে এসেছেন বিএনপির দলীয় সূত্র জানায়, নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে।
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলেই সহায়ক সরকারের রূপরেখা গঠন করা হয়েছে। খালেদা জিয়া শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে রূপরেখা ঘোষণার তারিখ চূড়ান্ত করবেন। দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, সহায়ক সরকার ঘোষণা করা হলেও অন্য কোনো ফর্মুলায় যদি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের নিশ্চয়তা পায় বিএনপি তাহলে সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সমঝোতায় আসবে। এক্ষেত্রে সরকার অগ্রণী ভূমিকা পালন না করলে আন্দোলনের প্রস্তুতিও নিচ্ছেন তারা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার আমাদেরকে সমাবেশের অনুমতি দিচ্ছে না কয়েকবার তারিখ পাল্টানোর পরও এখনো অনুমতি দেয়নি সমাবেশ শেষ হওয়ার পরেই সময় সুযোগ বুঝে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কাজ করবেন। সময়বুঝে তিনি এই প্রস্তাব দিবেন। প্রস্তাবের পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনার পর পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।