মায়ানমারে অবস্থানরত বাকি রোহিঙ্গাদেরও বাংলাদেশে পাঠাতে প্রতি রাতেই সীমান্ত এলাকায় উস্কানিমূলক গুলিবর্ষণ করছে মায়ানমার সেনাবাহিনী। গুলি বর্ষণের পরের দিন সকালে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে বাকি রোহিঙ্গারাও চলে আসছে বাংলাদেশে।
গত দু’মাসে বড় ধরনের সবগুলো অনুপ্রবেশের আগের রাতেই ঘটছে গুলিবর্ষণের ঘটনা। সেই সাথে মায়ানমার সেনাবাহিনী জিজ্ঞাসাবাদের নামে রোহিঙ্গা তরুণদের ডেকে নিয়ে গুম করছে –এমন অভিযোগ করছে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা।
বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তবর্তী স্থানীয়দের দাবি, প্রতিরাতেই মায়ানমারের অভ্যন্তরে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটছে। রাত যত গভীর হয়, গুলির শব্দ ততোই বাড়তে থাকে। বিশেষ করে উখিয়ার আঞ্জুমান পাড়া সীমান্ত দিয়ে সন্ধ্যার পর থেমে থেমে গুলিবর্ষণ হলেও ভোররাতের দিকে টানা গুলিবর্ষণ চলে। এসময় স্থানীয় বাংলাদেশীরাও আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়ে।
স্থানীয়রা বলেন, দুই একদিন পরপরই মায়ানমার আমাদের ওপর গুলি চালায়। অনেকটা যুদ্ধের মত করে।
গত ১৬ই অক্টোবরের পর শুধুমাত্র উখিয়ার আঞ্জুমান পাড়া সীমান্ত দিয়েই বড় চারটি অনুপ্রবেশের ঘটনায় ২৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে আসে। মায়ানমারে অবস্থানরত বাকি রোহিঙ্গাদেরও বাংলাদেশে পাঠাতে মায়ানমারের বাহিনী এ গুলিবর্ষণের কৌশল নিয়েছে বলে মনে করছেন ৩৪ বি জি বি ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর ইকবাল আহমেদ।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের বড় একটা অংশ বাংলাদেশে আসার পর তারা কৌশল গ্রহণ করছে যাতে তারা আর ফেরত না যায়। বর্ডারে তারা প্রতিদিন প্রেট্রোলিং করছে।
মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা জানিয়েছে, গত ক’দিন ধরে মায়ানমার বাহিনী জিজ্ঞাসাবাদের নামে রোহিঙ্গা তরুণদের বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু পরবর্তীতে সেই তরুণদের আর কোনো হদিস পাওয়া যায়না।
এর আগে আতঙ্ক সৃষ্টির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পাঠাতে মায়ানমার সেনাবাহিনী অন্তত ১৫ বার বাংলাদেশের সীমান্ত লঙ্ঘন করেছিলো। আর মায়ানমার বাহিনীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।