দুই কোটি টাকার বেশি সম্পদের ওপর সারচার্জ আদায় করা যাবে বলে হাইকোর্টের আদেশ আপাতত বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের করা লিভ টু আপিলের অনুমতি দিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বাধানী পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে ২০১৫ সালে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ সম্পদশালীদের কাছ থেকে সারচার্জ নেওয়া সাংবিধানিক বলে রায় দেন।
এদিকে ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআই দীর্ঘদিন ধরে সম্পদের সারচার্জ প্রত্যাহার দাবি করে আসছে।
এফবিসিসিআই এর দাবি ছিল, প্রদর্শিত পরিসম্পদের উপর যেসব সারচার্জ আরোপ করা হচ্ছে তা বিদ্যমান কর নীতিমালার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাই সম্পদের সারচার্জ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পরামর্শক কমিটির ৩৭তম সভায় এফবিসিসিআই থেকে দেয়া প্রস্তাবনা দেওয়া হয়।
সেই প্রস্তাবনায় বলা হয়, যেহেতু নিট পরিসম্পদের উপর করদাতাগণ পূর্বের বছরে একবার কর পরিশোধ করছেন, সেহেতু একই সম্পদের ওপর পরের বছর পুনরায় সারচার্জ আরোপ সঠিক নয়। কারণ সম্পদের কর একবার পরিশোধ হচ্ছে। পরের বছর আবার দিলে তা একই সম্পদের উপর দুইবার কর পরিশোধ করতে হয়।
এ জটিলতা দূর করতে কর পরিশোধের পর অর্জিত পরিসম্পদের ভিত্তিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) যে কর আরোপ করে তা বাতিলের জোর দাবি জানিয়েছে এফবিসিসিআই। আয়কর আধ্যাদেশের ১৬ ধারায় শুধুমাত্র কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী মোট আয়ের উপর কর ধার্য করার বিধান রয়েছে। সুতরাং নিট পরিসম্পদের উপর কর আদায় করা সম্পূর্ণরূপে বেআইনি।
ব্যক্তি করদাতার প্রদর্শিত নিট সম্পদের ভিত্তিতে সরকার সারচার্জ আদায় করা হচ্ছে। ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে এ ক্ষেত্রে নিট সম্পদের পরিমাণ দুই কোটি ২৫ লাখ টাকা হলে কর দিতে হয় না। তবে দুই কোটি ২৫ লাখ টাকার ঊর্ধ্বে কিন্তু ১০ কোটি টাকার বেশি নয়—এমন সম্পদধারীকে ১০ শতাংশ হারে সারচার্জ দিতে হয়।
সম্পদের মূল্য ১০ কোটি টাকার অধিক কিন্তু ২০ কোটি টাকার বেশি নয়—এমন সম্পদধারীকে ১৫ শতাংশ, ২০ কোটির বেশি কিন্তু ৩০ কোটির বেশি নয়—এমন সম্পদধারীকে ২০ শতাংশ এবং ৩০ কোটি টাকার বেশি যেকোনো পরিমাণ সম্পদের ওপর ২৫ শতাংশ হারে সারচার্জ আরোপ করা রয়েছে।