ঋণ জালিয়াতির মামলায় নীলফামারী-৪ আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শওকত চৌধুরীকে দুই মাসের মধ্যে পাঁচ কোটি টাকা জমা না দিলে তার জামিন বাতিল করা হবে বলে আদেশ দিয়েছে আপিল বিভাগ।
সোমবার সকালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে গত ১২ নভেম্বর, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ২৫ কোটি টাকা না দিলে মো. শওকত চৌধুরীর জামিন বাতিল করা হবে বলে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ আগামী ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করেন । একই বেঞ্চ এই সময়ের মধ্যে তাকে লিভ টু আপিল করতেও বলেন।
আদালতে শওকত চৌধুরীর পক্ষে শুনানি করেন তার আইনজীবী এ এম আমিনউদ্দিন, নুরুল ইসলাম সুজন ও ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এমপি। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান। কমার্স ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন।
উল্লেখ্য ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন ২০১৬ সালের ৮ ও ১০ শওকত চৌধুরীসহ নয়জনের বিরুদ্ধে বংশাল থানায় দুটি মামলা করে। এর মধ্যে এক মামলায় ৯৩ কোটি ৩৬ লাখ ২০ হাজার ২১৩ টাকা এবং আরেক মামলায় ৮২ লাখ ৮৯ হাজার ৮১৫ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।
অন্য আসামিরা হলেন- কমার্স ব্যাংকের ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বংশাল শাখার প্রাক্তন শাখা ব্যবস্থাপক মো. হাবিবুল গনি, চাকরিচ্যুত অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান, ফার্স্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার শিরিন নিজামী, প্রাক্তন সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সফিকুল ইসলাম, প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট পানু রঞ্জন দাস, প্রাক্তন ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ইখতেখার হোসেন, প্রাক্তন অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার দেবাশীষ বাউল, প্রাক্তন এক্সিকিউটিভ অফিসার ও বর্তমানে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার আসজাদুর রহমান।
এরপর আগস্ট মাসে শওকত চৌধুরী হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার পর নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে নিম্ন আদালতও তার জামিন মঞ্জুর করেন।
অভিযোগে বলা হয়, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের বংশাল শাখা থেকে ২০১৬ সালের ৮ মে ৮২ লাখ ৮৯ হাজার ৮১৫ এবং ১০ মে ৯৩ কোটি ৩৬ লাখ ২০ হাজার ২১৩ টাকা ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে সংসদ সদস্য শওকতসহ নয়জনের নামে দুটি মামলা করে দুদক।
২০১২ এর ডিসেম্বর থেকে ২০১৫ সালের মার্চ পর্যন্ত মোট ৩৭টি এলসি খুলে মেসার্স যমুনা এগ্রো কেমিক্যাল, মেসার্স এগ্রো কেমিক্যাল লিমিটেড ও উদয়ন এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নামে অন্য আসামিদের সঙ্গে যোগসাজসে তিনি এ ঋণ জালিয়াতি করেন। পরে যা সুদে আসলে শত কোটি টাকার ওপরে চলে যায়।