রাজধানীর দয়াগঞ্জে ছিনতাইয়ের সময় মায়ের কোল থেকে পড়ে এক পাঁচ মাসের শিশুর নির্মমভাবে মৃত্যু হয়েছে। আজ ভোরে এ ঘটনা ঘটে। শিশুটির নাম আরাফাত। সে শরীয়তপুরের শাহ আলম ও আকলিমা বেগম দম্পতির ছেলে।
আজ সোমবার ভোরে রাজধানীর দয়াগঞ্জ এলাকায় ২/৩ জনের একদল ছিনতাইকারীর কবলে পড়ার পর এ ঘটনা ঘটে।
পরে জখম হওয়া শিশুটিকে তৎক্ষণাৎ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে এলে সকাল ৭টায় কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। ব্যাগ কেড়ে নিতে আসা ছিনতাইকারীরা কেড়ে নিলো ফুটফুটে শিশুটির প্রাণ।
শিশুটির মায়ের নাম আকলিমা, বাবা শাহ আলম। এই দম্পতির আরও এক সন্তানের নাম আল আমিন (২)। তারা শরীয়তপুর সদরের নরসিংদীপুরের বাসিন্দা। ভোরে লঞ্চযোগে শরীয়তপুর থেকে ঢাকায় ফিরছিলেন তারা।
সন্তানহারা আকলিমা বলেন, আল আমিন দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। লঞ্চ থেকে নেমেই তাই তার বাবা আল আমিনকে নিয়ে শিশু হাসপাতালে যায়। অন্য দিকে আমি আরাফাতকে নিয়ে রিকশাযোগে শনির আখড়ায় বোন মাকসুদার বাসায় যাচ্ছিলাম।
আমাদের রিকশা দয়াগঞ্জে পৌঁছালে ২/৩ জন ছিনতাইকারী হঠাৎ ভ্যানিটি বেগে টান দেয়।
ছিনতাইকারীদের হেঁচকা টানে কোল থেকে আমার আরাফাত পড়ে যায়। তারা আমার ব্যাগ কেড়ে নিয়েছে। আমার কলিজার টুকরাকেও কেড়ে নিয়েছে।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু মিয়া জানান, মুমূর্ষু অবস্থায় শিশুটিকে ঢামেকে নিয়ে এলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
গেন্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, দয়াগঞ্জে শিশুর মৃত্যুর সংবাদ পেয়েছি। ঘটনাটি গেন্ডারিয়া থানার মধ্যে হয়েছে কি-না সেটি জানার চেষ্টা করছি।
এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু মিয়া শিশুটির পরিবারের বরাত দিয়ে জানান, সোমবার ভোরে শাহ আলম ও আকলিমা বেগম শরীয়তপুর থেকে লঞ্চে ঢাকায় আসেন। তাদের আরেক সন্তান আল-আমিনের (২) চিকিৎসার জন্যই মূলত তারা ঢাকায় এসেছেন।
ভোরের দিকে সদরঘাটে নেমে শাহ আলম তার অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে রিকশায় করে শিশু হাসপাতালের দিকে রওনা হন। আরেকটি রিকশায় স্ত্রী ও সন্তানকে তুলে দেন। তাদের যাওয়ার কথা আকলিমার বোনের বাসা শনির আখড়ায়।
রিকশাটি দয়াগঞ্জ ঢালে পৌঁছার পর পরই তিন-চার ছিনতাইকারী আকলিমার ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান দিয়ে দৌড় দেয়। এ সময় আকলিমার কোলে থাকা পাঁচ মাসের শিশু আরাফাত মাটিতে পড়ে যায়।
স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আকলিমা শিশুটিকে নিয়ে ঢামেক হাসপাতালে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।