ঘুষ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘ভয়ঙ্কর বার্তা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার আত্মস্বীকৃত চোর ও দুর্নীতিবাজ, শিক্ষামন্ত্রীর রোববারের বক্তব্য সেটির বহিঃপ্রকাশ’।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সোমবার দুপুরে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রীর এ বক্তব্যে জাতির হৃদয়ের স্পন্দনকে থামিয়ে দেয়ার শামিল বলেও মন্তব্য করেন রিজভী। তিনি বলেন, এ বক্তব্য দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী এক ভয়ঙ্কর বার্তা পাঠালেন শিক্ষাঙ্গনে।
রোববার রাজধানীতে শিক্ষা অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্য করে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন- ‘সব জায়গায় যে বলেছি অপচয়-দুর্নীতি আমরা কঠোর অবস্থান নেব এবং দুর্নীতির ক্ষেত্রে আমাদের জিরো টলারেন্স। এটি আমাদের বলতে হবে; কিন্তু আমি ইডির (ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট) সভায় বলছি, আপনারা দয়া করে ভালো কাজ করবেন। আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ, আপনারা ঘুষ খাবেন, তবে সহনশীল হইয়্যা খাবেন। অসহনীয় হয়ে বলা যায়, আপনারা ঘুষ খাইয়েন না- এটি অবাস্তবিক কথা হবে’।
নাহিদ আরও বলেন, ‘নানা জায়গায় এ রকম হইছে, সব জায়গাতেই এ রকম হইছে। খালি যে অফিসার চোর তা না, মন্ত্রীরাও চোর, আমিও চোর। …এই জগতে এ রকমই চলে আসতেছে। সবাইকে আমাদের পরিবর্তন করতে হবে’।
রিজভী বলেন, ‘দেশে বিদ্যমান নৈরাজ্যকর অমানিশার মধ্যে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দেশের জন্য আরও ভয়াবহ উদ্বেগ, ভয় ও বিপদের কারণ হতে পারে’।
রিজভী বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে প্রমাণিত হল- বর্তমান সরকার আত্মস্বীকৃত চোর ও দুর্নীতিবাজ। দেশে যে জঙ্গলের রাজত্ব চলছে, শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে সেটিরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে’।
দেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘সুকৌশলে শিক্ষামন্ত্রী নিজেদের লোকদের বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কেনাবেচার সুযোগ করে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকার স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা চাকরির পরীক্ষাগুলোতে প্রশ্নফাঁস করে টাকা ইনকামের অভিনব কৌশল উদ্ভাবন করেছেন’।
‘প্রশ্নফাঁস কেলেঙ্কারিতে ছাত্রলীগ জড়িত। শিক্ষামন্ত্রীর কথায় মনে হচ্ছে, তিনিই এসব কেলেঙ্কারির উৎসাহদাতা’, বলেন রিজভী।
দেশের প্রতিটি সেক্টর আজ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত বলে অভিযোগ করেন এ বিএনপি নেতা।
দ্রব্যমূল্যের দামে ঘোড়া ছুটছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘জনগণের সঙ্গে বর্তমান সরকার তামাশা করছে। জনগণের টাকা লুটপাটে উৎসাহিত হয়ে সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি করতে দ্বিধা করছে না।’