অর্থপাচার মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিম ও তার দুই ভাই গুলজার আহমেদ, আজাদ আহমেদকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
সোমবার সকালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এই আদেশের ফলে দিলদারের দুই ভাই গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদের মুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। তবে দিলদার আহমেদ সেলিমের বিরুদ্ধে আরো মামলা থাকার তিনি আপাতত জামিন পাচ্ছেন না।
আদালতে আপন জুয়েলার্সের মালিকদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
এর আগে হাইকোর্টের দেয়া জামিন কয়েক দফায় স্থগিত রাখেন আদালত।
গত ১৪ ডিসেম্বর আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিম এবং তার দুই ভাই গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদকে একটি করে মামলায় জামিন দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
গত ২২ নভেম্বর তিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে রাজধানীর গুলশান, ধানমণ্ডি, উত্তরা ও রমনা থানায় মানি লন্ডারিং আইনে করা পৃথক পাঁচটি মামলায় কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন।
বহুল আলোচিত রাজধানীর বনানীতে দুই তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় গত বছরের মে মাসে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদারের ছেলে সাফাত আহমেদ।
সাফাতের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড়ের মধ্যে আপন জুয়েলার্সের অবৈধ লেনদেনের তদন্তে নামেন শুল্ক গোয়েন্দারা।
গত ৪ জুন শুল্ক বিভাগ আপন জুয়েলার্সের ডিএনসিসি মার্কেট, উত্তরা, মৌচাক, সীমান্ত স্কয়ার এবং সুবাস্তু শাখা থেকে প্রায় ১৫ মণ স্বর্ণ ও ৪২৭ গ্রাম হীরা জব্দ করে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেয়।
জব্দকৃত এসব স্বর্ণালঙ্কারের বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় গত ১২ আগস্ট শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর মুদ্রাপাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে দিলদার ও তার ভাইদের বিরুদ্ধে গুলশান, ধানমণ্ডি, রমনা ও উত্তরা থানায় পাঁচটি মামলা করে।
এসব মামলায় চলতি বছরের ২২ ও ২৩ অক্টোবর ওই তিন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
অভিযোগে বলা হয়, চোরাচালানের মাধ্যমে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে স্বর্ণালঙ্কার এনে এর অর্থ অবৈধভাবে বিদেশে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদের সঠিক পরিমাণ তারা আয়কর বিবরণীতে উল্লেখ করেননি।
অর্থপাচারের তিন মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর গত ২৪ অক্টোবর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন আপন জুয়েলার্সের মালিক তিন সহোদর। এর পর থেকে কারাগারে আছেন তারা। নিম্নআদালতে জামিন না পেয়ে হাইকোর্টে আসেন তিন সহোদর।