আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরা দেওয়ার সময় অনেক লোকজন থাকে। এতে সরকারি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব পালনে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। এসব বিষয় বিবেচনা করে নিরাপত্তার স্বার্থে ওই আদালতে খালেদা জিয়ার মামলাগুলো স্থানান্তর করা হয়েছে। এতে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই।
আজ সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটের স্পিকার সাবিনা আক্তারের সঙ্গে বৈঠক শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
এর আগে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা আরও ১৪টি মামলা বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসাসংলগ্ন ভবনে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে স্থানান্তর করে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়।
যেখানে আগে থেকেই তার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট সংক্রান্ত দুটি দুর্নীতির মামলার বিচার চলছে।
গত বৃহস্পতিবার (০৪ জানুয়ারি) জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারকই অস্থায়ী আদালতের বিশেষ এজলাসে বসে বিচারকাজ পরিচালনা করবেন।
যে ১৪টি মামলা স্থানান্তর করা হচ্ছে তার মধ্যে ঢাকা মহানগর দায়রা আদালতে ৯টি, বিশেষ জজ আদালতে ৩টি ও ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে ২টি মামলা বিচারাধীন আছে।
মামলাগুলোর মধ্যে দুর্নীতির ৩টি মামলা সেনাশাসিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে করা। বাকি ১০টি মামলা ২০১৫ সালে, আর একটি ২০১৬ সালে করা।
এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ২-এ বিচারাধীন শাহবাগ থানার ৫৩(২)০৮ মামলাটি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিশেষ এজলাসে স্থানান্তর করা হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, মামলাটি ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে পরিচালিত হলেও ভবনটিতে আরও অসংখ্য মামলার কাজ চলে। ফলে জনাকীর্ণ এই ভবনে নিরাপত্তাজনিত কারণে খালেদা জিয়ার মামলাটি সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
একই কারণ দেখিয়ে তেজগাঁও থানার ২০(১২)০৭ নম্বর, ৫(৯)০৭ নম্বর, ১৫(০৮)১১ নম্বর এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের করা রমনা থানার ৮(৭)০৮ নম্বর মামলার কার্যক্রম স্থানান্তর করা হয়।
এ ছাড়া বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা দারুসসালাম থানার ৬২(১)১৫ নম্বর, ৩(৩)১৫ নম্বর, ৮(২)১৫, ৫(২)১৫, ৬(২)১৫, ৩১(২)১৫, ১২(২)১৫ ও ২৯(২)১৫ এবং যাত্রাবাড়ী থানায় করা বিশেষ মামলা ৫৯(১)১৫ বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিশেষ এজলাসে স্থানান্তর করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, মহানগর হাকিম আদালত নম্বর ৭-এ বিচারাধীন পিটিশন মামলা ১০৯৬/১৬ ও ১১০/১৫-এর বিচারকাজ এতদিন মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত ভবনে চলছিল। এই প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে মামলা দুটির কার্যক্রম বিশেষ আদালতে স্থানান্তর করা হল।
বর্তমানে অস্থায়ী আদালতে যে দুটি মামলা চলছে তার মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন চলছে।
আর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় যুক্তিতর্ক শুনানি হবে ৯ ও ১০ জানুয়ারি। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হলেই মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা হবে।