ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। বিষয়টি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর মালিবাগ গোলবাগ এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। তবে গত সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে রাজধানীর মালিবাগ এলাকা থেকে বিএনপির এই নেতাকে আটক করা হয় বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত সহকারী ও স্বেচ্ছাসেবক দলের দপ্তর সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাচ্চু।
আক্তারুজ্জামান বাচ্চু আরো জানান, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী হিসেবে সিলেট থেকে ঢাকায় ফিরছিলেন সোহেল। পথে মালিবাগ থেকে তাকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। তবে পরিবারের সদস্যরাও তার অবস্থান জানাতে পারছেন না। আমরা বিষয়টি নিয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছি।
গত ৩০ জানুয়ারি আদালতে খালেদা জিয়ার হাজিরাকে কেন্দ্র করে হাইকোর্ট মোড়ে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা তিনটি মামলারই আসামি সোহেল।
প্রসঙ্গত, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাবিব-উন নবী খান সোহেলের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় নাশকতার অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। রাজধানীর পল্টন, মিরপুর, মতিঝিল, ডেমরা, আদাবর ও কালসী থানায় দায়ের মামলায় উচ্চ আদালত থেকে তিনি সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পান। ২০১৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত হাবীব-উন নবী সোহেলের বিরুদ্ধে তদন্তাধীন ও অভিযোগ গঠন হওয়া ১১০টির মত মামলা রয়েছে।
২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর নাশকতার বিভিন্ন মামলায় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন সোহেল। আদালত জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তবে হাবিব-উন-নবী খান সোহেল এরইমধ্যে উচ্চ আদালত থেকে ১৪৩ টি মামলায় জামিন পেয়েছেন।
গত মঙ্গলবার হাইকোর্ট এলাকায় পুলিশের ওপর বিএনপির কর্মীদের হামলার পর থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার চালাচ্ছে। প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতকে। পরে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, নির্বাহী সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, গণশিক্ষা বিষয়ক সহ-সম্পাদক আনিসুর রহমান খোকন, নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুনসহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা গ্রেপ্তার হন। খালেদা জিয়ার রায়কে ঘিরে সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তার চলছে বলে দাবি করেছে দলটি। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটা তাদের স্বাভাবিক অভিযান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থেই তা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা দিন ধার্য আছে। নেতিবাচক রায় আসতে পারে এমন আশঙ্কা বিএনপি নেতাকর্মীদের। রায়কে ঘিরে ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। সরকারি দলের পক্ষ থেকে ওই দিন আনুষ্ঠানিক কোনো কর্মসূচি ঘোষণা না করলেও ঢাকা দক্ষিণ সিটি মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা সাঈদ খোকন রাজপথে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। যুবলীগও রাজপথ দখলে রাখার ঘোষণা দিয়েছে।