অবশেষে বহু প্রত্যাশিত সেই জামিন পেলেন বলিউড সুপারস্টার সালমান খান। গত বৃহস্পতিবার যোধপুরের একটি আদালত বেআইনিভাবে কৃষ্ণসার প্রজাতির দুটি হরিণ হত্যার দায়ে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেছিলেন সালমানকে।
এর আগে, আজ ভারতীয় সময় ১০টা ৪০ থেকে জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হয়। সালমান খানের জামিন শুনানিতে বাদী-বিবাদী উভয় পক্ষের বাদানুবাদ শোনেন সেশন জজ রবীন্দ্র কুমার যোশী। অতঃপর তিনি দুপুরের পর রায় প্রদান করবেন বলে জানান।
দুপুরের পর রায় প্রদান করেন সেশন জজ। তিনি সালমান খানের জামিন মঞ্জুর করেন।
এ-প্রসঙ্গে সালমানের আইনজীবী বলেন, আমরা বিচারিক আদালত কর্তৃক প্রদত্ত রায়কে চ্যালেঞ্জ করিনি। আমরা শুধু জামিন চেয়েছি।
ইতিমধ্যে দুই রাত যোধপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে কাটাতে হয়েছে ‘দাবাং’ তারকাকে।
সূত্র : চ্যানেল ১৮, এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া
পূর্বের খবর…
কারাগারে খাবার গ্রহণ করেন নি সালমান খান
বলিউড তারকা সালমান খানের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হওয়ার পর শুক্রবার তার আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেছিলেন, কিন্তু তার শুনানি শেষ হয় নি।
তাই বৃহস্পতিবারের মতো শুক্রবার রাতেও সালমান খানকে রাজস্থানের যোধপুর জেলেই কাটাতে হবে। আদালত ১৯৯৮ সালে দুটি কৃষ্ণসার প্রজাতির হরিণ শিকার মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করে পাঁচ বছরের জেল দিয়েছে । খবর বাসসের।
এর আগেও জেল খেটেছেন তিনি। এই দফায় বৃহস্পতিবারই ছিলো প্রথম রাত।
জেলের কর্মকর্তারা বলছেন, বৃহস্পতিবার থেকে জেলের খাবার মুখেই তোলেন নি সালমান খান। না খেয়েছেন রাতে, না ছুঁয়ে দেখেছেন শুক্রবার সকালের নাস্তাও।
যোধপুর জেলের সুপারিন্টেনডেন্ট বিক্রম সিংকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ‘বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে অন্যান্য কয়েদিদের মতোই এই সুপারস্টারকেও রুটি আর ডাল দেওয়া হয়েছিল। আজ সকালে জলখাবারে ছিল খিচুড়ি। কোনটাই তিনি মুখে তোলেন নি।’
কোটি কোটি মানুষের প্রিয় এই অভিনেতাকে অবশ্য কোনো বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না জেলে।
বিক্রম সিং জানিয়েছেন, সাধারণ কয়েদিদের মতোই রাখা হচ্ছে তাকে। তার কয়েদি নম্বর ১০৬।
যে দুই নম্বর ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে এই সুপারস্টারকে, সেখানেই আছেন ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত স্বঘোষিত গুরু আসারাম বাপু।
দু’জনের কুঠরির মধ্যে শুধু একটা পর্দা দেওয়া।
রাতে জেলের মেঝেতে একটা কম্বল পেতে শুয়েছিলেন তিনি, যদিও ওই স্বঘোষিত গুরু আসারাম বাপু সালমান খানকে নিজের গদিটা ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন, এমনটাই খবর দিয়েছে ভারতের কয়েকটি সংবাদমাধ্যম।
এই যোধপুর জেলেই তিনবার থেকে গেছেন তিনি। মোট ১৮ দিন জেলে থাকতে হয়েছিল।
যোধপুর থেকে বিবিসি সংবাদদাতা নারায়ণ বারেঠ জানাচ্ছেন, যে কৃষ্ণসার হরিণ শিকার মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে তাকে বৃহস্পতিবার পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের যে আদেশ দিয়েছিল রাজস্থানের আদালত, সেই শাস্তির ওপরে তিনি এখনও জামিন পান নি।
জেলা সেশন্স কোর্টে জামিনের আবেদন জানানো হলেও তার শুনানি শেষ হয় নি।
নিম্ন আদালত থেকে সব নথি সেশন্স কোর্টে এসে পৌঁছায় নি। শনিবার নথি এলে তবেই আবারও শুনানির পরে আদেশ দেবেন বিচারক।
এদিকে বলিউডের এই সুপারস্টারকে জেলে যেতে হওয়ায় অনেকেই তার প্রতি সহানুভূতি দেখাচ্ছেন সামাজিক মাধ্যমে ।
তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন যেমন চলচ্চিত্র জগতের রথী মহারথীরা, তেমনই আছেন অগণিত ভক্তকুলও।
অন্যদিকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণবাদীরা দাবী করছেন সর্বোচ্চ সাজাই হওয়া উচিত ছিল তার।
যে কৃষ্ণসার হরিণ শিকারে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন, সেটি বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী এবং বন্যপ্রাণী রক্ষা আইনের একনম্বর তফসিলে অন্তর্ভুক্ত। এই দোষে সর্বোচ্চ সাজা ৬ বছরের।