1. sardardhaka@yahoo.com : adminmoha : Sardar Dhaka
  2. nafij.moon@gmail.com : Nafij Moon : Nafij Moon
  3. rafiqul@mohajog.com : Rafiqul Islam : Rafiqul Islam
  4. sardar@mohajog.com : Shahjahan Sardar : Shahjahan Sardar
শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০২:৫১ অপরাহ্ন

চিকিৎসা ব্যয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে বাংলাদেশ

মহাযুগ নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৮
  • ২৬১ বার

বাংলাদেশে চিকিৎসা ব্যয় ক্রমে বেড়েই চলেছে। ভাল ও উন্নত চিকিৎসা সেবা নেয়া সাধারণ মানুষের ক্ষমতার বাইরেই চলে যাচ্ছে।

চিকিৎসকদের অতি মুনাফালোভী মানসিকতা, কমিশন বাণিজ্য, সিন্ডিকেট করে সরবরাহ নেই বলে দফায় দফায় ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি, কারণে অকারণে নানা ধরণের পরীক্ষা ইত্যাদিই মূলত এর প্রধান কারণ। ওষুধ রপ্তানিতে বাংলাদেশ সাফল্য দেখাচ্ছে; অথচ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের মানুষকেই স্বাস্থ্যসেবায় সবচেয়ে বেশি টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যয় করতে গিয়ে বছরে ১৫ শতাংশ মানুষ অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেন। আর বছরে গরীব হচ্ছে ৬৪ লাখ মানুষ।

অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা, নিয়ন্ত্রণহীন বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধের বাজারকে দায়ী করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনোস্টিক ও প্যাথলজি সেন্টারে চলে শুধু টাকা আদায়ের গলাকাটা বাণিজ্য। রোগীর জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণেও সেবার নামে অপারেশন থিয়েটারে চলে অমানবিক গোপন বাণিজ্য। টাকা ছাড়া তারা কিছুই বোঝেন না। এছাড়া ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা থেকে কমিশন বাণিজ্য, রোগী ভর্তি, নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের ওষুধ প্রেসক্রাইব, অপারেশন নিশ্চিত করা, প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে লাইফ সাপোর্টে পাঠানো, কেবিনে রোগী ধরে রাখাসহ লাশ হস্তান্তর পর্যায়ের নানা ধাপে কমিশন লেনদেন হয়। আর রোগীকে গুনতে হয় বাড়তি টাকা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কঠোর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো অবাধে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

‘বিল্ডিং অ্যাওয়ারনেস অব ইউভার্সেল হেলথ কভারেজ বাংলাদেশ : অ্যাডভান্স দি এজেন্ডা ফরওয়ার্ড ২০১৬’ সালের তথ্য অনুযায়ী, স্বাস্থ্যসেবা নিতে গিয়ে বাংলাদেশে জনপ্রতি পাবলিকের পকেট থেকে ব্যয় করতে হচ্ছে ৬৩ দশমিক ৩ শতাংশ। যা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি। যদিও বর্তমানে এই ব্যয় ৬৮ শতাংশে পৌঁছেছে। জনপ্রতি ব্যয়ের দিক থেকে ৬১ দশমিক ৯ শতাংশ নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান। ৫৭ দশমিক ৬ শতাংশ নিয়ে তৃতীয় ভারত, ৪৯ দশমিক ৯ শতাংশ নিয়ে চতুর্থ শ্রীলঙ্কা, ৪৯ দশমিক ২ শতাংশ দিয়ে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে নেপাল, ৩৫ দশমিক ৬ নিয়ে ষষ্ঠ মালয়েশিয়া ও ১৩ দশমিক ১ শতাংশ নিয়ে সবার নিচে রয়েছে থাইল্যান্ড। অর্থাৎ থাইল্যান্ডে স্বাস্থ্যসেবায় পাবলিকের পকেট থেকে কম টাকা খরচ করতে হচ্ছে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, স্বাস্থ্যখাতে অর্থায়নের বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, এ খাতে অপর্যাপ্ত ব্যয়, সরকারি ব্যয় কমে যাওয়া, বাজেটে কম বরাদ্দ, বরাদ্দ অনুযায়ী সঠিকভাবে বণ্টন না করা, অতিরিক্ত পকেট মানি, সরকারি ও পকেট মানির বিস্তর ব্যবধান, নিয়ন্ত্রণহীন বেসরকারি স্বাস্থ্য খাত, স্বাস্থ্যবীমায় অনিহা, দাতাগোষ্ঠীর সহায়তা কমে যাওয়া ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর স্বল্প অংশগ্রহণের কারণে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য ব্যয় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি। অপরদিকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে স্বাস্থ্যখাতে সরকারি বরাদ্দের দিক থেকেও বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা স্বাস্থ্য ব্যয় কমাতে বেশকিছু পদক্ষেপের কথা বলেছেন। বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আইনের মাধ্যমে দ্রুত সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনা, সব ধরণের ওষুধের মান উন্নত করা, চিকিৎসকদের কমিশন বাণিজ্য ও অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা বন্ধ করা, চিকিৎসকদের ফি নির্ধারণ করে দেয়া, রেফারেল পদ্ধতি চালু করা, কাঠামো অনুযায়ী, উপজেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সচল রাখা, ঢাকামুখি আসার প্রবণতা কমানো, ওষুধ কোম্পানীর আগ্রাসী বাণিজ্য বন্ধ করা ও দালালের উৎপাত বন্ধ করা গেলে বাংলাদেশে পাবলিকের পকেটের ব্যয় কমে যাবে।

বাংলাদেশ ন্যাশনাল হেলথ অ্যাকাউন্টের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবা নিতে গিয়ে বছরে ৬৪ লাখ মানুষ গরীব হয়ে যাচ্ছে। এর অন্যতম কারণ এখানে স্বাস্থ্য ব্যয়ের অধিকাংশই পাবলিকের পকেট থেকে ব্যয় করতে হচ্ছে। আর এই ব্যয়ের মধ্যে ৬৭ শতাংশই হচ্ছে ওষুধপত্রে। ফলে বাংলাদেশে পাবলিকের পকেট থেকে বেশি ব্যয় হচ্ছে। যা বিশ্বের অন্য কোনো দেশে নেই।

এ জাতীয় আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2023 Mohajog