ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন আলোচিত ভারতের রাজস্থান রাজ্যের ধর্মগুরু আসারাম বাপু। ১৬ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিলো তার বিরুদ্ধে।
বুধবার (২৫ এপ্রিল) রাজ্যের যোধপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত বিশেষ আদালতের বিচারক মধুসুদন শর্মা এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আসারামের দুই সহযোগীও দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। খালাস পেয়েছেন দু’জন।
রায় ঘোষণার পর পর আসারামের আশ্রমের মুখপাত্র নীলম দুবে জানিয়েছেন, আদালতের এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা হাইকোর্টে আপিল করবেন।
২০১৩ সালে উত্তরপ্রদেশের শাহজাহানপুরের ১৬ বছরের কিশোরীকে যোধপুরের মানাই গ্রামে নিজের আশ্রমে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন আসারাম। বিষয়টা জানাজানি হলে খুন করে ফেলবেন বলেও ওই কিশোরী ও তার পরিবারকে হুমকি দেন তিনি। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। ২০১৩ সালেই গ্রেপ্তার হন আসারাম। তার বিরুদ্ধে গুজরাটের সুরাটেও আরেকটি ধর্ষণের মামলা চলছে।
বিশ্বজুড়ে আসারাম বাপুর অন্তত ৪শ’ আশ্রম রয়েছে, যেখানে তিনি অনুসারীদের দীক্ষা দেন। জানা যায়, ষাটের দশকে আধ্যাত্মিক চর্চা শুরু করেন আসারাম। ১৯৭২ সালে গুজরাটে আসারাম খোলেন তার প্রথম আশ্রম।
তার ওয়েবসাইটে দাবি করা হয়, বিশ্বজুড়ে ৪ কোটি অনুসারী রয়েছে আসারামের। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও অতীতে তার কাছে দীক্ষা নিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে চলা মামলায় সাক্ষী হয়েছেন, এমন অন্তত ৯ জন গত ৫ বছরে দুর্বৃত্তের হামলার শিকার হয়েছেন। এদের মধ্যে ৩ জন মারা গেছেন। এসব ঘটনারও তদন্ত করছে পুলিশ।
এদিকে আসারাম বাপুর রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাজস্থান, গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানা রাজ্যে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায়। আসারামের ভক্তরা যাতে রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সহিংসতা না করতে পারে, সেদিকে কড়া নজর রাখছে পুলিশ।
৩০ এপ্রিল পর্যন্ত যোধপুরজুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। শহরে সব বাস টার্মিনাল ও রেলস্টেশনে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। হোটেল ও ধর্মশালায় যাতায়াতকারীদের ওপরও নজর রাখছে পুলিশ। যোধপুর শহরের বাইরে পল রোডে আসারামের আশ্রমকে এরই মধ্যে খালি করা হয়েছে।