বৃষ্টির সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে ১২ জন নিহত হয়েছে। এরমধ্যে সিরাজগঞ্জে বাবা-ছেলেসহ ৫ জন মারা গেছে। সকালে হঠাৎ কাল মেঘে ঢাকা পড়ে আকাশ। ঝড়ো বাতাসের সাথে শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। ছিল বজ্রপাতও। এতে সুনামগঞ্জ, নওগাঁ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাঙ্গামাটি ও নোয়াখালীতে ১ জনে করে ৬ জন নিহত হয়। দুইজন মারা গেছে মাগুরায়। আর সিরাজগঞ্জে পৃথক স্থানে বজ্রপাতে ৫ জনের মৃত্যু হয়।
সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর, কাজিপুর ও কামারখন্দ উপজেলায় বজ্রপাতে পিতা-পুত্র ও কলেজছাত্রসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার এ ঘটনা ঘটে। মৃতরা হলেন— শাহজাদপুর পৌর এলাকার ছয়আনিপাড়া মহল্লার ফারুক হাসানের ছেলে নাবিল হোসেন (১৭), রাশেদুল হাসানের ছেলে পলিং হোসেন (১৬), কাজীপুর উপজেলার ডিগ্রি তেকানী গ্রামের মৃত পারেশ মন্ডলের ছেলে শামছুল মন্ডল (৫৫) ও তার ছেলে আরমান (১৪) এবং কামারখন্দের পেস্তক কুড়াগ্রামের মৃত আহের মন্ডলের ছেলে কাদের হোসেন (৩৭)।
কাজিপুরের তেকানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হারুনার রশিদ এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, রোববার সকালে ডিগ্রি তেকানী চরে ছেলেকে সাথে নিয়ে বাদাম তুলছিলেন শামছুল। এ সময় ঝড় বৃষ্টি শুরু হলে বজ্রপাত হয়ে দু’জনেই ঝলসে যান। স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে কাজিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে তাদের মৃত্যু হয়।
দুপুরের দিকে শাহজাদপুর উপজেলা ভূমি অফিসের সামনে বজ্রপাতে নাবিল ও পলিং নামের দুই কলেজ ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। তারা পৌর এলাকার ছয় আনিপাড়া মহল্লার বাসিন্দা ও শাহজাদপুর ডিগ্রি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। পোতাজিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইনচার্জ (নার্স) আব্দুল লতিফ ওই দুই ছাত্রের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কামারখন্দ উপজেলার পেস্তক কুড়া গ্রামের একটি ধানক্ষেতে বজ্রপাতে কাদের হোসেন (৩৭) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি ওই গ্রামের মৃত আহের মন্ডলের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, কৃষক কাদের হোসেন বাড়ীর পাশেই নিজের ক্ষেতে ধান কাটছিলেন। হঠাৎ করেই বৃষ্টি ও বজ্রপাত হতে থাকে। এক পর্যায়ে বজ্রপাতে তার শরীর ঝলসে যায়। তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে মারা যান। কামারখন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. তানজিলা বেগম বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এছাড়া, টানা বৃষ্টিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে নাকাল জনজীবন। বাইরে বেরিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েন তারা। কোথাও কোথাও ডুবে যায় রাস্তাঘাট। তলিয়েছে বোরো ক্ষেত। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় শিমুলিয়া-কাঠাঁলবাড়ি ও দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রূটে কয়েক ঘন্টা বন্ধ থাকে নৌচলাচল।