মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাগদাদের ওপর নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছেন। ইরাকি পার্লামেন্টে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে প্রস্তাব পাস হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই এ হুমকি দিলেন ট্রাম্প। প্রস্তাবটি পাস করার সময় ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মাহাদি মার্কিন সেনাদের ইরাক ছাড়ার আহ্বান জানান।
শুক্রবার বাগদাদে মার্কিন বিমান হামলায় ইরানি কমান্ডার সোলেইমানি নিহত হওয়ার মাত্র একদিন পরেই ইরাকি পার্লামেন্টে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের প্রস্তাবটি পাস হয়। রোববার পার্লামেন্টর এক বিশেষ অধিবেশনে ওই প্রস্তাবটি পাস হয় বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা।
প্রস্তাবে বলা হয়,‘ইরাকের সামরিক অভিযানের অবসান এবং বিজয় অর্জনের কারণে সরকার আন্তর্জাতিক জোটের সেনাদের প্রতি ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তার অনুরোধ প্রত্যাহার করে নিচ্ছে।’
ওই প্রস্তাবে বিদেশি সেনারা যাতে ইরাকের আকাশ, স্থল এবং জলসীমা ব্যবহার করতে না পারে সে ব্যাপারে একটি নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বানও জানানো হয়েছে।
রোববার ওই প্রস্তাবের ওপর পার্লামেন্টে বিতর্ক শুরুর আগে ইরাকের অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী আদেল আব্দুল মাহদি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব মার্কিন সৈন্যদের ইরাক ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত।
প্রধানমন্ত্রী মাহদি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশের সাথে সুস্থ এবং সঠিক সম্পর্কের খাতিরে’ইরাকে মার্কিন সামরিক উপস্থিতির সমাপ্তি টানা প্রয়োজন।’
প্রস্তাবটি পাস হওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরেই ইরাকের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। রোববার সন্ধ্যায় ফ্লোরিডায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি হুঙ্কার দিয়ে বলেন, ‘তারা (ইরাক সরকার) যদি আমেরিকান সেনাদের ওই দেশ ছাড়তে বাধ্য করে তাহলে ইরাকের ওপর ‘বড় রকমের নিষেধাজ্ঞা’ আরোপ করা হবে।
তিনি বলেন, ইরাক সরকার যদি যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের জোরপূর্বক বের করে দেয় তবে এমন নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হবে, যা তারা কখনো দেখেনি। এর পাশে ইরানের নিষেধাজ্ঞাকে অতিনগণ্য মনে হবে।
ট্রাম্প বলেন, ইরাকে আমাদের অস্বাভাবিক ব্যয়বহুল বিমানঘাঁটি রয়েছে। এটার জন্য বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। তারা এ টাকা না দিলে আমরা সেখান থেকে সরে আসবো না।
তবে ট্রাম্প ইরাকে থাকা কোন বিমানঘাঁটির কথা বলেছেন তা স্পষ্ট করেননি। ধারণা করা হচ্ছে, আনবার প্রদেশের আল আসাদ বিমানঘাঁটির কথা বলেছেন তিনি। এটি ইরাক ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে পরিচালনা করে। বর্তমানে ইরাকে প্রায় পাঁচ হাজার মার্কিন সেনা রয়েছে।
তবে ট্রাম্পের এ হুমকি সত্ত্বেও বিদেশি সেনা বের করে দেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল থাকার কথা জানিয়েছেন ইরাকি প্রধানমন্ত্রী আদিল আব্দুল মাহদি।