গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘ব্র্যাক শিক্ষাতরী’ বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন মন্তব্য করেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পারফরম্যান্স ব্র্যাকের এসএসসি এইচএসসি পাস করার শিক্ষকদের থেকে খারাপ।
এরকম নিউজ বাংলাদেশ জার্নালসহ অন্যান্য পোর্টালে ভাইরাল হয়। পরে সংবাদটি শিক্ষকদের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিমন্ত্রীর এরকম মন্তব্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক শিক্ষক হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সংবাদটির পরিপ্রেক্ষিতে আব্দুল মালেক নামে এক শিক্ষক প্রাথমিক শিক্ষকদের ফেসবুক গ্রুপে প্রকাশিত সংবাদের স্ক্রিনশটসহ একটি আপলোড করেন। পাঠকদের জন্য লেখাটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়, আপনার মন্তব্য ১০০% সত্যি নয়,আংশিক সত্য হলে ও সেটার জন্য আপনারাই দায়ী।
১। ২০১৩ সালে জাতীয়করণ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পরীক্ষা ছাড়া নিয়োগ দিয়েছেন।
২। সকাল ৯টা হতে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সময় সূচি করেছেন,যেটা রীতিমত শিশু ও শিক্ষক নির্যাতন।
৩। শিক্ষকদের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী করে রেখেছেন।
৪। শিক্ষকদের বেতন ৩৬ হাজার টাকা আবার সহকারীদের ১২ তম গ্রেড দিয়েছেন বলে তাচ্ছিল্য করেন আপনারাই।
৫। শিক্ষকদের দিয়ে ভোটার হালনাগাদ,আদম শুমারি, শিশু জরীপ, কৃমির ঔষধ, ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো ও বিভিন্ন দিবস পালন করান আপনারাই।
এছাড়া আরো অনেক কাজ শিক্ষকদের দিয়েই করান। অপরপক্ষে ব্র্যাক ১জন শিক্ষক দিয়ে ৩০/৩২ জন শিশুকে আনন্দের সাথে ২/২.৩০ ঘণ্টা পড়াই। আমরা পড়াই প্রতি শ্রেণিতে ৭০/৮০ জন শিশুকে।
প্রাথমিক শিক্ষা তথা শিক্ষকদের প্রতি আপনারা সদয় হলেই প্রাথমিক শিক্ষা এগিয়ে যাবে, অযথা সম্মানিত শিক্ষকদের নিয়ে নেগেটিভ মন্তব্য থেকে বিরত থাকার জন্য বিনীত অনুরোধ রইল।
উল্লেখ্য, গতকাল প্রতিমন্ত্রী ‘ব্র্যাক শিক্ষাতরী’ বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠকে বলেছিলেন, ‘একবার এক পিটিআইতে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে আমি বলেই ফেলেছিলাম, আপনারা (সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকরা) চারজন শিক্ষক মিলে একজন শিক্ষকের সমান কাজ করুন। ব্র্যাকের শিক্ষকরা ভালো কাজ করেন, কারণ মনে হয় কর্তৃপক্ষ জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পেরেছেন। কিন্তু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মনে করেন একবার সরকারি চাকরি পেয়ে গেছেন তো আর কিছু লাগবে না। একদম ‘সরকারি মাল দরিয়া মে ঢাল’।’