আমেরিকায় কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিভেদপূর্ণ নির্বাচনের ভোট শুরু হচ্ছে আর একটু পর।
প্রথম ভোট গ্রহণ শুরু হবে ভারমন্টে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ভোর পাঁচটা নাগাদ (বাংলাদেশ সময় বিকাল চারটা)।
এর মধ্যেই প্রায় ১০ কোটি ভোটার আগাম ভোট দিয়েছেন, যা গত একশো বছরের মধ্যে আগাম ভোটের ক্ষেত্রে একটা রেকর্ড।
নির্বাচনের শেষ সময়গুলো উভয় প্রার্থীই দোদুল্যমান রাজ্যগুলোর ভোটারদের টানার চেষ্টা করে কাটাচ্ছেন।
দেশজুড়ে চালানো জরিপে দেখা যাচ্ছে যে, জো বাইডেন বেশ এগিয়ে রয়েছেন। কিন্তু যেসব রাজ্যের ভোটের ফলাফলে নির্বাচনের ফলাফল নির্ভর করতে পারে, সেসব রাজ্যে উভয়ের অবস্থান বেশ কাছাকাছি।
যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচন
সোমবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আরও চারটি প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ণ রাজ্যে প্রচারণা চালিয়েছেন। নর্থ ক্যারোলিনা, স্ক্র্যানটন, পেনসিলভানিয়ায় প্রচারণা চালিয়েছেন। সেখানে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী বছর হবে সবচেয়ে ভালো অর্থনীতির বছর।
পেনসিলভানিয়াতে প্রচারণা চালিয়েছেন জো বাইডেনও। ওহাইয়োতে প্রচারণায় মি. বাইডেন বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যাগ গুছিয়ে চলে যাবার সময় হয়েছে।
”টুইট রাগ, ঘৃণা, ব্যর্থতা আর দায়িত্বহীনতার যথেষ্ট হয়েছে।” তিনি বলছেন।
এর মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের ভোটাভুটি নিয়ে আইনি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
নির্বাচনের সব ভোট গণনা হতে সবমিলিয়ে বেশ কয়েকদিন লেগে যেতে পারে। তবে কে বিজয়ী হতে যাচ্ছে, সেটা পরদিন সকালের মধ্যেই আভাস পাওয়া যায়।
তবে কর্মকর্তারা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, এই বছর চূড়ান্ত ফলাফল জানতে বেশ কয়েকদিন, এমনকি কয়েক সপ্তাহও লেগে যেতে পারে। কারণ এই বছরে রেকর্ড সংখ্যক পোস্টাল ব্যালট পড়েছে।
আবার একেক রাজ্যে ডাকযোগে আসা ভোট গণনার একেক নিয়ম থাকায় অনেক সময় সেখানকার ফলাফল জানতে বেশ সময় লাগে।
সর্বশেষ ২০০০ সালে নির্বাচনের ফলাফল চূড়ান্ত হতে এক মাসের বেশি সময় লেগে গিয়েছিল। সেইবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ফলাফল চূড়ান্ত হয়।
হোয়াইট হাউজে একটি ইলেকশন নাইট পার্টির আয়োজন করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্যদিকে ডেলাওয়ারে উইলমিংটনে বসে নির্বাচনী রাত পর্যবেক্ষণ করবেন জো বাইডেন।
এদিকে নির্বাচনী রাতে ১০ হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার প্লাজা এবং হোয়াইট হাউজের কাছের একটি পার্কে বিক্ষোভ অবস্থান করবে বলে জানা যাচ্ছে।
অনেক দেশে জাতীয়ভাবে একক প্রার্থীকে ভোট দেয়ার নিয়ম থাকলেও, মার্কিন নির্বাচনের পদ্ধতি অনুযায়ী, ভোটাররা রাজ্যভিত্তিক প্রার্থী বাছাই করে থাকেন।
প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে জনসংখ্যার বিচারে নির্দিষ্ট সংখ্যক ইলেকটোরাল কলেজের ভোট থাকে। ওই রাজ্যে সবচেয়ে বেশি ভোট যিনি যান, সেখানকার সবগুলো ইলেকটোরাল কলেজের ভোট তার পক্ষে যোগ হয়।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে হলে অন্তত ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেতে হবে।
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেই মঙ্গলবারের ভোট হচ্ছে। বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। খবর: বিবিসি বাংলা