প্রজনন মৌসুমের কারণে টানা ২২ দিনের অপেক্ষা শেষে আজ মধ্যরাত ১২টায় ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা কাটলো। গত ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ ধরা, বিক্রি, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করে সরকার।
১৯৫০ সালের মাছ রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন (প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন ফিস অ্যাক্ট, ১৯৫০) অনুযায়ী প্রতি বছর ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমের একটি নির্দিষ্ট সময় ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
১৯৮৫ সালের মাছ রক্ষা ও সংরক্ষণবিধি (প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন ফিস রুলস, ১৯৮৫) অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে কমপক্ষে এক বছর থেকে সর্বোচ্চ ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয়দণ্ড পেতে হবে। দ্বিতীয়বার একই অপরাধ করলে শাস্তি দ্বিগুন হবে।
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় এ সময়ে অনেক জেলেকে জেল-জরিমানা করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে অবৈধ জাল।
নিষিদ্ধ সময়ে সারাদেশের মাছের ঘাট, মৎস্য আড়ত, হাট-বাজারে অভিযান চালানো হয়েছে। প্রশাসন, পুলিশ, র্যাব, নৌপুলিশ, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, কোস্টগার্ডসহ সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় সাধন ও তদারকির জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি টিম কাজ করে।
অন্যদিকে, ঢাকা মহানগরের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র, আড়ত, বাজার, সুপারশপ ও ইলিশ মাছ প্রাপ্তির সম্ভাব্য স্থানে দৈনিক নজরদারি ও অভিযান পরিচালনা এবং প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য মৎস্য অধিদফতর গঠিত ৮টি মহানগর মনিটরিং টিম কাজ করেছে।
অপরদিকে, ইলিশ সম্পৃক্ত ৩৬ জেলায় প্রশাসন এবং জেলা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে যথাযথভাবে অভিযান পরিচালনা হচ্ছে কি না- হাট-বাজারে ইলিশ মাছ ক্রয়-বিক্রয় কিংবা মজুত ও পরিবহন হচ্ছে কি না এবং সংশ্লিষ্ট এলাকায় বরফকল বন্ধ আছে কি না, সে বিষয়ে অভিযানিক এলাকা পরিদর্শন ও তদারকির জন্য মন্ত্রণালয়ের ২২ জন কর্মকর্তাকে বিভিন্ন জেলার দায়িত্ব দেয়া হয়।
এছাড়া সংশ্লিষ্ট এলাকায় সার্বক্ষণিক অবস্থান করে মাঠ পর্যায়ে পরিচালিত অভিযান ও মোবাইল কোর্ট এবং ভিজিএফ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও তদারকিসহ প্রতিদিন মৎস্য অধিদফতরে স্থাপিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে মৎস্য অধিদফতরের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত ৫টি বিভাগীয় মনিটরিং টিম কাজ করেছে।
বিভাগীয় মনিটরিং টিম, জেলা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করে মাঠ পর্যায়ে পরিচালিত অভিযান ও মোবাইল কোর্ট এবং জেলেদের ভিজিএফ বিতরণ কার্যক্রম তদারকি ও সমন্বয়ের জন্য মৎস্য অধিদফতর গঠিত ১০ সদস্যের কেন্দ্রীয় মনিটরিং কমিটি কাজ করেছে।