বাংলা চলচ্চিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তি অভিনেত্রী ববিতার জন্মদিন আজ। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অভিনেত্রী আজকের এই দিনে জন্মগ্রহন করেন। এ বছরে তিনি ৬৮ বছরে পা রাখলেন।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার পর থেকেই অনেকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ববিতাকে, জানালেন অভিনেত্রী। এদিকে সোশ্যাল মিডিয়াতে গুণি এ অভিনেত্রীকে শুভেচ্ছায় সিক্ত করছেন তার ভক্ত-অনুরাগীরা।
ববিতার পুরো নাম ফরিদা আক্তার পপি। ১৯৫৩ সালের ৩০শে জুলাই বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বাবা নিজামুদ্দীন আতাউব একজন সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন এবং মাতা বি. জে. আরা ছিলেন একজন চিকিৎসক।
বাবার চাকরি সূত্রে তারা তখন বাগেরহাটে থাকতেন। তবে তার পৈতৃক বাড়ি যশোর জেলায়। শৈশব এবং কৈশরের প্রথমার্ধ কেটেছে যশোর শহরের সার্কিট হাউজের সামনে রাবেয়া মঞ্জিলে।
সিনেমার একটি স্মৃতি তিনি জানিয়েছেন এভাবে, ‘আমি স্পঞ্জের স্যান্ডেল খুলে লাফ দিয়ে পার হয়ে গেছি। পার হয়ে এপারে চলে এসেছি ; কিন্তু স্যান্ডেলটা ওপারেই রয়ে গেছে। এখন অবস্থা এ রকম, স্যান্ডেল আনার জন্য আবার ওপারে যেতে হবে লাফ দিয়ে- এ রকম একটা দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে আছি।
‘তখন দেখলাম, মানিকদা এই ব্যাপারটা খেয়াল করলেন। খেয়াল করে তিনি নিজে এগিয়ে এসে ওই পারে গিয়ে আমার স্যান্ডেল দুটো তুলে নিয়ে আবার এপারে এলেন। তারপর আমার হাতে দিয়ে বললেন, ‘নে’।’
সত্যজিতের এমন কাণ্ড দেখে একদম হা হয়ে গিয়েছিলেন ববিতা।– ‘বিস্ময়ে ববিতা’ বইয়ের মলাটে এই স্মৃতিটুকু লেখা আছে। ভেতরে আছে আরও অনেক কথাই।
সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনিসংকেত’ ছবিতে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের বিপরীতে ‘অনঙ্গ’ বউ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় এ নায়িকা। এই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সুবাদে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ববিতার এক বিশাল পরিচিতি এবং গ্রহণযোগ্যতা গড়ে ওঠে। ববিতা অভিনীত এই চলচ্চিত্র ১৯৭৩ সালে বার্লিন ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে এবং ১৯৭৪ সালে শিকাগো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘বেস্ট ফিল্ম’ হিসেবে পুরস্কৃত হয়।
১৯৭৪ সালে কলকাতায় ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ডে তিনটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার লাভ করে। নারায়ণ ঘোষ মিতার ‘আলোর মিছিল’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য ১৯৭৫ সালে ববিতা প্রথমবারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।