1. sardardhaka@yahoo.com : adminmoha : Sardar Dhaka
  2. nafij.moon@gmail.com : Nafij Moon : Nafij Moon
  3. rafiqul@mohajog.com : Rafiqul Islam : Rafiqul Islam
  4. sardar@mohajog.com : Shahjahan Sardar : Shahjahan Sardar
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০২:৫৪ অপরাহ্ন

সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচল শুরু

মহাযুগ নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১৭
  • ১৮৬ বার

পর্যটন মৌসুম শুরুর প্রায় আড়াই মাস পর টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে প্রায় তিনশ’ পর্যটককে নিয়ে চলতি মৌসুমে প্রথম যাত্রা শুরু করে জাহাজ কেয়ারি সিন্দাবাদ।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জাহাজটি প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে পৌঁছায় বলে জানায় ট্যুরিস্ট পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার হোসাইন মো. রায়হান কাজেমী।

তিনি বলেন, কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের অনুমতিক্রমে চলতি পর্যটন মৌসুমে এই প্রথম কোনো জাহাজ সেন্টমার্টিনে যাত্রা করে। টেকনাফ-সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হওয়ায় পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে ট্যুরিস্ট পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সকালে যখন সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে জাহাজ ছাড়ে তখন ওই জাহাজে করে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা সেন্টমার্টিন যায়। পরে জাহাজ যখন টেকনাফের উদ্দেশে রওনা দিবে তখনও ট্যুরিস্ট পুলিশ পর্যটকদের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করবে। ট্যুরিস্ট পুলিশের এই দায়িত্ব পর্যটন মৌসুম পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

বুধবার সকাল থেকে পর্যটকদের নিয়ে যাত্রা করবে ছয়টি জাহাজ। তবে চলাচলের ক্ষেত্রে মায়ানমারের নাইক্ষ্যংদিয়া সীমান্ত এলাকা অতিক্রমের সময় সতর্কতা অবলম্বনের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে জাহাজ কর্তৃপক্ষকে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ফলে কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার সবগুলো স্বাভাবিক প্রক্রিয়াই অনেকটা থমকে যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাধাগ্রস্ত হয়েছে পর্যটন শিল্প। বিশেষ করে সংঘাতসহ নানা দুর্ঘটনার আশঙ্কায় বন্ধ করে দেয়া হয় টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল। অথচ অক্টোবর থেকেই শুরু হয় পর্যটনের ভরা মৌসুম। শেষ পর্যন্ত প্রশাসন অনুমতি দিয়েছে জাহাজ চলাচলের।

কক্সবাজার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লুৎফর রহমান আজাদ বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করেই নাফ নদীতে পর্যটকবাহী জাহাজ আগে যেভাবে যেত, ঠিক সেভাবেই পর্যটকরা যেতে পারবে।

স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, টেকনাফ জেটি ঘাট থেকে বদরে মোকাম হয়ে অন্তত পাঁচ নটিক্যাল মাইল জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য ডুবোচর। যে কারণে সেন্টমার্টিনগামী জাহাজগুলোকে ডুবোচর এড়াতে মায়ানমার সীমান্তবর্তী নাইক্ষ্যংদিয়া চরের কাছাকাছি হয়ে চলাচল করতে হয়। তাই বর্তমানে সংঘাত এড়াতে নাইক্ষ্যংদিয়া অতিক্রমের সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশনা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহিদ হোসেন ছিদ্দিক বলেন, সম্প্রতি নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে একটি পত্র এসেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন অনুমতি দিয়েছে। মায়ানমার নাইক্ষ্যংদিয়া দিয়ে জাহাজ অতিক্রমের সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এদিকে দীর্ঘ ৬ মাসেরও বেশি সময় পর আবার পর্যটক আসা শুরু হওয়ায় আশার আলো দেখছেন সেন্টমার্টিনের আবাসিক হোটেল-মোটেল-কটেজ ও রেঁস্তোরা মালিক এবং সংশ্লিষ্টরা।

কেয়ারি সিন্দবাদ জাহাজের টেকনাফের ব্যবস্থাপক মো. শাহ আলম বলেন, সেন্টমার্টিন নৌপথে চলাচলের জন্য আমাদের জাহাজের পক্ষে সারা বছরের অনুমতি রয়েছে। কিন্তু সাগর উত্তাল ও রোহিঙ্গা সঙ্কটকে কেন্দ্র করে স্থানীয় প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রায় সাড়ে ৬ মাস জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল। বর্তমানে পরিস্থিতি অনুকূল থাকায় আবারো পর্যটক পারাপারের অনুমতি দেয়া হয়েছে। আগের নিয়মে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৯টায় টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে জাহাজ ছেড়ে যাবে।

সেন্টমার্টিন হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি ও স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মুজিবুর রহমান বলেন, দেশের মানচিত্রের সর্ব দক্ষিণের বিচ্ছিন্ন ও একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের অধিকাংশ মানুষ পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। সেপ্টেম্বর থেকে এপ্রিল-মে পর্যন্ত পর্যটক সেবার আয়ে চলে এখানকার অধিকাংশ পরিবার। কিন্তু গত মে মাস থেকে রবিবার পর্যন্ত পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল না করায় দ্বীপের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হচ্ছিল। সোমবার পর্যটকবাহী জাহাজ চালু হওয়ায় আবার দ্বীপের সবখানেই প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।

ট্যুরস অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন কক্সবাজারের সদস্য ও দিগন্ত ট্যুরিজমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়ার মুহাম্মদ জানান, জাহাজ চলাচল শুরু হওয়া পর্যটন সংশ্লিষ্টদের জন্য খুশির খবর। জাহাজে প্রথম দিনে ২৯৮ জন যাত্রী পাঠানো গেছে।

বনবিভাগের টেকনাফ বিট কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, পুরো বছরের জন্য জাহাজ চলাচলের অনুমতি থাকলেও বর্ষায় এবং সাগর উত্তালের অন্য সময়ে জাহাজ ছাড়ার অনুমতি দিয়ে ঝুঁকি নিতে চায় না প্রশাসন। এরমাঝে রোহিঙ্গা সঙ্কট এবারের জাহাজ চলাচলের অনুমতি স্থবির ছিল। সোমবার থেকে আবারো ঘাটে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।

সেন্টমার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান নুর মুহাম্মদ বলেন, যেহেতু পর্যটনই দ্বীপের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি, তাই সংশ্লিষ্টদের পর্যটক সেবায় আন্তরিক হতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ভাটার সময় কেউ যাতে সৈকতের পানিতে না নামেন সে ব্যাপারে মাইকিং ও ফেস্টুনে প্রচারণা চলছে।

এ জাতীয় আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2023 Mohajog