আবারো এক বছরের মাথায় বাড়ছে গ্যাসের দাম। আবাসিক ছাড়া সব খাতে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে পাঠিয়েছে গ্যাস বিতরণ প্রতিষ্ঠানগুলো।
এপ্রিল থেকে উচ্চমূল্যের এলএনজি আমদানির কারণে গ্যাসের দাম বাড়ানোর বিকল্প নেই বলে মনে করছে জ্বালানি বিভাগ।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে জ্বালানি অনুসন্ধানে জোর দিলে ব্যয়বহুল এলএনজি নির্ভরতা এড়ানো যেতো।
জ্বালানি সংকট কাটাতে এপ্রিলে শুরু হচ্ছে দৈনিক ৫০ কোটি ঘনফুট তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজি আমদানি। আর উচ্চমূল্যের এ জ্বালানি আমদানির ব্যয় সামলাতে শুরু হয়েছে আবারো গ্যাসের দাম বাড়ানোর আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া।
এরই মধ্যে আবাসিক ছাড়া সব খাতে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে জমা দিয়েছে বিতরণ প্রতিষ্ঠানগুলো। যেখানে খাতভেদে ৪ গুণ পর্যন্ত দাম বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে।
বর্তমানে দেশে উৎপাদিত বিদ্যুতের ৬২ শতাংশই গ্যাসভিত্তিক। তাই গ্যাসের দাম বাড়লে বাড়বে বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয়ও। আবার জ্বালানি খরচ বাড়ায় শিল্প বিনিয়োগেও নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কা করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আবারো গ্যাসের দাম বাড়ানোর উদ্যোগের জন্য সরকারের ভুল নীতিই দায়ী।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. এম শামসুল আলম বলেন, সাগরের গ্যাস উত্তোলনে অগ্রগতি নেই। স্থলের কোন গ্যাস ফিল্ড এক্সটেনসিভ ওয়েতে অনুসন্ধানে গেলাম না আমরা। গ্যাসের এবং জ্বালানির সংকট তীব্র করে আমরা এলএনজির চাহিদা বাড়িয়ে আমরা দাম বৃদ্ধিকে অবশ্যম্ভাবী করলাম।
তবে জ্বালানি ব্যয় বাড়লেও উৎপাদন খাতে সার্বিকভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলেই মনে করছেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
তিনি বলেন, ‘ইন্ডাস্ট্রির মাত্র নয় শতাংশ হলো জ্বালানি খরচ। এই নয় ভাগ যদি না দেয় তাহলে বাকি নব্বই ভাগও কিন্তু তার আসবে না। সেটা তো কেউ চিন্তা করে না। তারা চব্বিশ ঘন্টা গ্যাস পাবে, সেই কস্ট অব অপরচুনিটি তৈরি হবে, মার্কেট আরও বড় হবে।
গ্যাসের দাম বাড়াতে সরকারি প্রস্তাবের পর বল এখন এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের কোর্টে। আবেদন যাচাই বাছাই আর গণশুনানির পর গ্যাসের নতুন দাম ঠিক করবে কমিশন। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, দাম বাড়ানোর সরকারি প্রস্তাবের বিপরীতে গ্রাহকদের জন্য গ্যাসের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখাই হবে কমিশনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।