1. sardardhaka@yahoo.com : adminmoha : Sardar Dhaka
  2. nafij.moon@gmail.com : Nafij Moon : Nafij Moon
  3. rafiqul@mohajog.com : Rafiqul Islam : Rafiqul Islam
  4. sardar@mohajog.com : Shahjahan Sardar : Shahjahan Sardar
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৬:৪২ পূর্বাহ্ন

বিশেষ সম্পাদকীয়: শিক্ষামন্ত্রীর চমৎকার নজির!

মহাযুগ নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৭ জুন, ২০১৬
  • ৩৩২ বার

দীর্ঘদিন ধরে এটাই রেওয়াজ। মন্ত্রী কোথাও যাবেন আর তার সঙ্গে ছুটবে দলে দলে সাংবাদিক আর ফটো-সাংবাদিক। কাগুজে পত্রিকা, অনলাইন, বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের লোকজন। সব মিলিয়ে রীতিমতো মিছিল। মন্ত্রীরাও চান প্রচার। তারা জানেন প্রচারেই প্রসার। সবচেয়ে বড় আকর্ষণ টিভিপর্দায় নিজের চেহারা দেখানো। এরই মধ্যে মন্ত্রীদের কারো কারো ক্যামেরাপ্রীতি নার্সিসিজমের পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে। তারা যেখানেই যান, কারণ যতো তুচ্ছই হোক, পেছনে ছোটেন ডজন-ডজন সাংবাদিক-ফটোসাংবাদিক। ‘যেখানে মন্ত্রী, সেখানেই ক্যামেরা’– গত ক’বছরে এটি প্রায় অবধারিত রেওয়াজে পরিণত।

এর খারাপ-ভালো দুটো দিকই আছে। মন্ত্রীর উপস্থিতির কারণে কোনো কোনো সময় সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান যেমন মেলে, পাশাপাশি পথেঘাটে যানজট, জনজটসহ নানান দুর্ভোগও বাড়ে।সবচেয়ে খারাপ ব্যাপারটা ঘটে তখনই, মন্ত্রীরা যখন একদল ফটোসাংবাদিক নিয়ে পাবলিক পরীক্ষার হলে বা হাসপাতালে মরণাপন্ন রোগীর শিয়রে গিয়ে উপস্থিত হন।

পরীক্ষার হলে যা ঘটে তা এক কথায় পীড়াদায়ক। একে তো মন্ত্রী মহোদয় এবং সেইসঙ্গে তাকে ঘিরে এতো-এতো ক্যামেরা, ফ্ল্যাশ-লাইট-ক্লিকের মধ্যে জীবনে প্রথম বা দ্বিতীয়বার পাবলিক পরীক্ষায় বসা কিশোর-কিশোরীদের আক্কেল গুড়ুম হবার যোগাড় হয়। তারা ভড়কে যায়, তাদের মনসংযোগ নষ্ট হয় এবং সর্বোপরি নষ্ট হয় তাদের মহামূল্যবান সময়। কেননা পরীক্ষার হলে প্রতিটি মিনিট বা সেকেন্ড বড়ই মূল্যবান। পরীক্ষার হলে মনোসংযোগের সামান্য ব্যাঘাত হলে পরীক্ষার্থীকে সারাজীবন তার খেসারত দিতে হয়।

দেরিতে হলেও ব্যাপারটা অনুধাবন করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। অন্যবারের মতো গতকাল ৩ এপ্রিল শুরু হওয়া এইচএসসি পরীক্ষার হলে তিনি ঢোকেননি। বরং বারান্দা থেকে শুধু তাকিয়ে দেখেছেন। তাঁর এই প্রথাভাঙ্গা আচরণ খুবই সুবিবেচনাপ্রসূত। নিজেকে ‘…আমি সাড়ে ১২ লাখ বাচ্চার বাবা-মা’ বলে ঘোষণা দিয়ে কাল তিনি ইতিবাচক নজির স্থাপন করলেন। অন্যদের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকুক।

‘হল ছেড়ে বারান্দায় মন্ত্রী’ শিরোনামে বাংলানিউজে কাল একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, সকালে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজকেন্দ্র পরিদর্শনকালে ভেতরে যাননি মন্ত্রী।পরীক্ষাকেন্দ্রের ফটকে ১০টা ৫ মিনিটে প্রবেশ করে মন্ত্রী সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমি শুধু বারান্দায় যাবো, ভেতরে যাবো না।’ মন্ত্রী এসময় কারণও ব্যাখ্যা করেন: ‘…আগে মেট্রিক পরীক্ষা বা আইএসসি পরীক্ষায় রেওয়াজ ছিল হলে হলে যাই, দেখি।

কিন্তু আমরা ২/৩ বছর ধরে বিবেচনা করছি এটা দুই কারণে– আগে মিডিয়ার সংখ্যা এতো ছিল না। ২, ৪, ৫, ১০ জন সাংবাদিক ছিল, যার ফলে চোখে লাগতো না ভাগ করে গেলে সমস্যা হতো না।এখন যদি আমরা একটা রুমে প্রায় ৫০ জন লোক ঢুকি তাহলে ওখানে ছাত্রসংখ্যা ৫০ বা ১০০ বা ২০০ হোক তখন স্বাভাবিকভাবে ওরা বিরক্ত হয়, তাদের মন অন্য দিকে যেতে পারে। আর একটি হলো তারা এতো উত্তেজনার মধ্যে পরীক্ষা দিচ্ছে, সবাই যদি গিয়ে ঢুকি তাহলে তাদের মধ্যে একটা প্রভাব পড়তে পারে।মিডিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে আগের মত করা সম্ভব না। যুগ পাল্টে গেছে, জগৎ পাল্টে গেছে, আমাদের বাস্তবতার সঙ্গে চলতে হবে। আপনারা তথ্য, ছবি নিলেন বা কেন্দ্র সচিবের সঙ্গে কথা বললেন- সেটা নিতে পারবেন।’

শিক্ষামন্ত্রীর এই দৃষ্টান্তটি অন্যরাও যদি অনুসরণ করেন, জনগণের কিসে ভালো হবে বা মন্দ হবে তা মাথায় রাখেন তাহলেই একটু একটু করে বদলে যাবে বাংলাদেশ। এমন ছোট ছোট নজিরই আরও বড় ইতিবাচকতার অভিমুখ রচনা করবে একদিন।

এ জাতীয় আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2023 Mohajog