শংকর শীল, হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জে ঈদের বাজার জমে উঠছে। রমজানের শুরু
থেকেই ঈদের কেনাকাটা শুরু হলেও
ঈদকে সামনে রেখে তা পুরোদমে
বেড়েই চলেছে।
বিশেষ করে ১৫ রমজানের পর থেকে
কেনা কাটায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন শহরসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ক্রেতাগণ।
ঈদে সবাই নতুন কাপড় পড়ে থাকে তাই চাহিদা মত কেনাকাটা করতে ভীড় জমায় শহরে অভিজাত বিপনীগুলোতে।
এবারের ঈদে তরুণীদের পচন্দের
শীর্ষে রয়েছে লেহেঙ্গা। তাই পোষাক
বিপনীগুলোতে দেখা যায় ক্রেতাদের
উপছে পড়া ভীড়। পাশাপাশি কমমেটিকস্
দোকানগুলোতেও রমনীদের উপচেপড়া
ভীড় চোখে পড়ার মতো। এদিকে শহরে
কেনাকাটা করতে জেলার বিভিন্ন স্থানের
লোকজন আসায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
ফলে ভোগান্তির শিকারও হচ্ছেন।
বিপনীগুলো বেশীর ভাগই ঘাটিয়া বাজার হওয়ায় যানজটের পাশাপাশি ক্রেতাদের ভীড়ও চোখে পড়ার মত।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের ঈদে কাপড়ের মূল্য একটু বেশি। যাতে করে নিম্ন আয়ের মানুষ তা ক্রয় করতে হিমশিম খাচ্ছেন। বিশেষ করে এর প্রভাব পড়েছে গ্রামাঞ্চলের কৃষকদের মাঝে। কারণ গ্রামাঞ্চলের কৃষিনির্ভর অধিকাংশ
মানুষের ঈদের মার্কেটের নির্ভর করে ধান
বিক্রির টাকার উপর। ধানের দাম কম হওয়ায় কম কেনাকাটার জন্য নির্ধারিত বাজেট অতি নগণ্য। এ তুলনায় কাপড়ের মূল্য অনেকটা আকাশচুম্বি। যাতে করে স্বল্প বাজেটের মধ্যেই তাদের মেটাতে হচ্ছে চাহিদা।
লক্ষ্য করে দেয়া যায়, মার্কেটগুলোতে
এখন বেশির ভাগ প্রবাসী স্বজন,
চাকুরীজীবি স্বজনরা কেনা কাটায় ব্যস্ত সময় পাড় করছেন।
মঙ্গলবার সরেজমিনে শহরের চৌধুরী বাজার, ঘাটিয়া বাজার শংকর সিটির শংকর বস্ত্রালয়, সফট রক বাংলাদেশ, এসডি স্টোর, এসডি প্লাজা, পরশমনি,
মধুমিতা ক্লথ স্টোর, আলনূর সিটি, মহাপ্রভুর আখড়া রোডস্থ পিয়ারা ম্যানশনের এমজি প্লাজা, টাউন হল রোডে খাজা গার্ডেন সিটিসহ বিভিন্ন
এলাকার দোকান ঘুরে দেখা গেছে,
ক্রেতাদের ভীড়।
এসডি স্টোরের ম্যানেজার অর্জুন রায় জানান, অন্যান্য বছরের এবার কাপড়ের দাম অনেকটা কমই। এবার সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা দামে শাড়ি বিক্রি করেছেন। তাদের দোকানে প্রতিদিন ক্রেতাদের ভিড় লেগেই থাকছে। তবে তিনি জানান, ঈদ মার্কেট যারা করেন তারা ধান চাউলের উপর নির্ভর থাকেন না।
শংকর বস্ত্রালয়ের ম্যানেজার চিনু দাশ ও সুজিত রায় জানান, অন্যান্যদের তুলনায় আমরা খুবই সীমিত লাভে কাপড় বিক্রি করছি। সকাল থেকে গভীর পর্যন্ত আমাদের দোকান থেকে জামা কাপড় ক্রয় করছেন। তবে তিনি জানান,
অন্যান্য বছরের সমান দামেই এবারও জামা কাপড় বিক্রি হচ্ছে।
শহরের শ্যামলী এলাকার বাসিন্দা স্বপ্না আক্তার জানান, গত বছরের তুলনায় এবার কাপরের দাম অনেকটা বেশিই মনে হচ্ছে। গত বছর ২হাজার
টাকা দিয়ে ভাল জামা কিনেছি কিন্তু এবার ওই বাজেটের ভাল জামা পাওয়া যাচ্ছে না।
ব্যবসায়ীরা জানান, এবার মার্কেটগুলোতে
এসেছে রাজশাহী সিল্ক, অ্যান্ডিকটন, সুতি ও তসর, টাপুর-টুপুর, জলনূপুর, পাঙ্খখুরি, আশিকি-২, বিপাশা বসু, তুমিলি, মেয়েদের লেহেঙ্গা, গেঞ্জিসেট, টপসেটসহ বাহারি পোশাক। ঈদ বাজারে নারীদের পছন্দে রয়েছে বিভিন্ন রকমের শাড়ি ও লেহেঙ্গা। জর্জেট, ধুপিয়ান সিল্কের শাড়িসহ বিভিন্ন পোশাক পাওযা যাচ্ছে ৫শ’ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিক্রি হচ্ছে।
তরুণীদের পচন্দের শীর্ষে রয়েছে
লেহেঙ্গা। এছাড়াও রয়েছে থ্রিপিস, বিপাশা বসু, জান্নাত, আশিকি, পাঙ্খখুরি, চেন্নাই, সোনাক্ষী, তুমিলি, ছানছান, ছাম্মাক ছালো, উলালা, ঝিলিক-২, খুশি,
আনারকলিসহ বিভিন্ন বাহারি পোশাক। যা ২ হাজার থেকে ১৫ হাজার পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। বেশি ভাগ বিক্রি হচ্ছে লেহেঙ্গা, সাহারা, বাজার্ট থ্রি- পিস, নির্ঝন থ্রি-পিস ৫ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা দামে ।
এছাড়া টাঙ্গাইলে জামদানী হাপসিল্ক ও তাতের শাড়ী ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা দামে, এন্ডিয়ান রাজগুরু, কাবেরি, মোবারকা সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।
পুরুষের টি-শার্ট, জিন্স প্যান্ট, শট পাঞ্জাবী,
জিন্সপেন্ট, শার্ট, ফতোয়া ইত্যাদি বিক্রি
হচ্ছে। এছাড়াও জুতা দোকান, টেইলারীর
গুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড়
দেখা গেছে।
এদিকে ব্যবসায়ীরা জানান, ২৫ রমজানের পর সকল শ্রেণীর ক্রেতাদের পুরোদমে
ভীড় বাড়বে। তখন গভীর রাত পর্যন্ত
দোকানপাট খোলা থাকবে বলে জানান। তবে এখনও অধিকাংশ ক্রেতারা মালামাল দেখে দাম জিজ্ঞেস করে চলে যাচ্ছেন বলেও জানান অনেক ব্যবসায়ী।