দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম এমপি বলেছেন, কুড়িগ্রামের বন্যা দুর্গত মানুষের পাশে কেউ না থাকলেও বর্তমান সরকার আছে এবং থাকবে। পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে, কোনো মানুষ না খেয়ে মরবে না।
কোথায় কখন কী লাগবে তা জেনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুর্যোগ মোকাবেলায় নেওয়া হবে পূর্ব প্রস্তুতি। যাতে যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরকারি সহায়তা দুর্গত মানুষের হাতে পৌঁছানো যায়, বলেন মন্ত্রী।
বুধবার (১৩ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুড়িগ্রাম জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কুড়িগ্রাম কালেক্টরেট সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিনের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন-কুড়িগ্রাম-৪ আসনের এমপি মো. রুহুল আমিন, ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ কামাল, মহাপরিচালক রিয়াজ আহম্মেদ, যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ মোহসীন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিনুল ইসলাম মঞ্জু মণ্ডল, সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি মো. জাফর আলী, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তবারক উল্লাহ্ প্রমুখ।
মন্ত্রী এসময় আরো বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলার পূর্ব প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমি কুড়িগ্রামসহ বন্যা দুর্গত ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রবণ ২১টি জেলা পর্যায়ক্রমে সফর করছি।
কুড়িগ্রাম অত্যন্ত ঝূঁকিপূর্ণ জেলা, কারণ ভারত থেকে অধিকাংশ নদীর পানি এ জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। মানুষের দুর্ভোগ কমাতে এবং ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে সরকারের পক্ষ থেকে তিন ধরনের ব্যবস্থা থাকবে। এগুলো হলো-বন্যার আগে, বন্যার সময় এবং বন্যা পরবর্তী ব্যবস্থা। এসব মাথায় রেখে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার কাজ করছে।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন এসময় মন্ত্রীর কাছে বন্যা মোকাবেলায় কুড়িগ্রাম জেলার জন্য চার মাসের প্রস্তুতির চাহিদার কথা তুলে ধরেন। দুর্গত এলাকায় ত্রাণ তৎপরতা ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য স্পিডবোট সরবরাহেরও দাবি জানান তিনি। একই সঙ্গে চর, দ্বীপচর এবং নিম্নাঞ্চলে মাটি কেটে উঁচু কেল্লা তৈরির প্রকল্প হাতে নেওয়ার প্রস্তাব দেন। যা মুজিব কেল্লা নামে পরিচিত হবে এবং এসব মাটির কেল্লায় বন্যা দুর্গত মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন মন্ত্রী।
এর আগে সকাল সোয়া ১১টায় মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া কুড়িগ্রাম সার্কিট হাউজে জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিনুল ইসলাম মঞ্জু মণ্ডল এতে সভাপতিত্ব করেন। এসময় মন্ত্রী বন্যার্তদের পাশে থাকার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। একই সঙ্গে জঙ্গি ও সন্ত্রাস-নৈরাজ্য দমনে জনগণকে সচেতন করে তুলতে অগ্রণী ভূমিকা রাখার পরামর্শ দেন।
মন্ত্রী এসময় বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্ব সরকার সফলভাবে দেশকে এগিয়ে নিতে সক্ষম হলেও সফলতার বার্তা সাধারণ মানুষ জানে না। উন্নয়নের অগ্রগতি মানুষকে জানানোর দায়িত্ব আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মীর।
এদিকে, এদিন চিলমারী উপজেলার বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণের কথা থাকলেও অনিবার্য কারণে পরে তা স্থগিত করা হয়। দুপুরে কুড়িগ্রাম সার্কিট হাউজে মধ্যাহ্নভোজ শেষে তিনি সড়ক পথে গাইবান্ধার উদ্দেশে রওনা হন।