আল্লাহতায়ালা মানুষের হেদায়েতের জন্য শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর পর্যায়ক্রমে ২৩ বছর ধরে নাজিল করেছেন কোরআনে কারিম। কোরআনের বিধি-বিধান পালন করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর ফরজ। কোরআন একটি নিখুঁত, নির্ভুল ও পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থার নাম। এটা বিশ্ব মানবতার মুক্তির এক মহাস্মারকও বটে। ৬১০ খ্রিস্টাব্দের ২৭ রমজান কদরের রাতে হেরা পর্বতের গুহায় কোরআনে কারিম নাজিল হওয়া শুরু হয়। পবিত্র কোরআন নাজিল হতে সময় লাগে ২২ বছর ৫ মাস ১৪ দিন।
বর্তমানে আমরা যেভাবে গ্রন্থাকারে কোরআনে কারিম দেখি শুরুতে কিন্তু কোরআন এমন ছিল না- এটা পাঠকমাত্র সবাই অবগত।
এ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন বর্ণমালার ঐতিহাসিক, দুর্লভ ও প্রাচীন লক্ষাধিক কোরআন শরিফের কপির সন্ধান পাওয়া গেছে। বিশ্বের অনেক মুসলিম পণ্ডিত প্রাচীনতম কোরআন শরিফের পাণ্ডুলিপির সঙ্গে পরিচিত নন। অথচ প্রাচীনতম কোরআন শরিফের অনেক পাণ্ডুলিপি পশ্চিমাদের হাতে রয়েছে। তারা এ সব কপিগুলোকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।
আজ থাকছে তেমন ঐতিহাসিক ও দুর্লভ কিছু কোরআনের পান্ডুলিপির আবিষ্কার, সংগ্রহ এবং সংরক্ষণ সম্পর্কে আলোচনা।
বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীনতম কোরআন
ইংল্যান্ডের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরীতে বিশ্বের প্রাচীনতম কোরআন শরিফের বেশ কয়েকটি পৃষ্ঠার সন্ধান পাওয়া গেছে। উদ্ধারকৃত এসব পৃষ্ঠা প্রায় ১৩৭০ বছর পূর্বের। কোরআন শরিফের প্রাচীন পৃষ্ঠাগুলো দীর্ঘদিন ধরে বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরীতে অজ্ঞাত অবস্থায় সংরক্ষিত ছিল। উদ্ধারকৃত পৃষ্ঠার বয়স জানতে রেডিওকার্বন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে।
রেডিওকার্বন করার জন্য কোরআন শরিফের পৃষ্ঠাগুলো অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে গবেষকরা গবেষণা ও পর্যবেক্ষণ করে দেখেছেন, উদ্ধারকৃত এ কোরআনের পৃষ্ঠাগুলো দুম্বা অথবা ছাগলের চামড়ায় লিখিত এবং এগুলো ৫৬৮ থেকে ৬৪৫ সালের মধ্যকার যেকোনো সময়ে লেখা হয়েছে।
চীনা ভাষায় অনুদিত হস্তলিখিত কোরআন শরিফ
চীনের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় শিয় অধ্যুষিত ‘গানসু’ শহরের মুসলিম আলেমরা চীনা ভাষায় অনুদিত প্রাচীনতম কোরআন শরিফের সন্ধান পেয়েছেন। ঐতিহাসিকদের ধারণা, অনুদিত এ কোরআন শরিফটি ১৯১২ সালের দিকে লেখা হয়েছে।
ইয়েমেনে ২০০ হিজরির হস্তলিখিত কোরআন শরিফ
ইয়েমেনের ‘আজ জালেয়’ শহরের এক যুবক সেদেশের প্রাচীনতম কোরআন শরিফ সংগ্রহ করেছেন। উদ্ধারকৃত কোরআন শরিফটি ২০০ হিজরির অন্তর্গত। এটি ইয়েমেনের ‘আজ-জালেয়’ শহরের দক্ষিণাঞ্চলের একটি দুর্গম গুহা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কোরআন শরিফটি ক্রয় করার জন্য ওই যুবককে এক কোটি ২০ লাখ রিয়ালের প্রস্তাব দেওয়া হলেও তিনি তা বিক্রি করতে অস্বীকার করেন।
কাজারের কোরআন শরিফ
‘মুসহাফে কাজর’ নামে প্রসিদ্ধ এক খণ্ড প্রাচীন কোরআন শরিফের সন্ধান পাওয়া গেছে। ওই কোরআন শরিফের প্রথম ৮টি পৃষ্ঠা সম্পূর্ণরূপে স্বর্ণের কারুকাজ সম্বলিত।