নাটক-চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত শুটিং হাউজগুলোতে সকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত শুটিং লেগে থাকে। কখনো কখনো সারা রাত অবধি চলে শুটিং। তবে এবার কিছুটা পরিবর্তন আসছে শুটিংয়ের সময়ে।
শুটিং বাড়িগুলোর সংগঠন ‘শুটিং হাউজ অ্যাসোসিয়েশন’ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসোসিয়েশন থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাত ১১টার পর শুটিং হাউজে আর শুটিং করা যাবেনা।
শুটিং হাউজ অ্যাসোসিয়েশনের এক চিঠিতে বলা হয়, রাত ১১ টার পর শুটিং বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ থাকবে। কোনোভাবেই অনুরোধ করা যাবে না। হাউজগুলোয় আগত লোকজনের নাম খাতায় লিপিবদ্ধ করতে হবে। সশরীরে এসে বুকিং করতে হবে, ফোন করে বুকিং পাওয়া যাবে না। নতুন এ সিদ্ধান্ত ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হয়েছে।
শুটিং হাউস অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি খলিলুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ সিদ্ধান্তগুলো আমরা আগেই নিতে চেয়েছিলাম। নানা কারণে হয়ে ওঠেনি। কিন্তু এবার দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি, প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য ও আশেপাশের বাড়িওয়ালাদের অনুরোধে সিদ্ধান্তগুলো নিতে হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘প্রতিটি হাউজে দেখাশোনার জন্য ৩-৪ জন কর্মচারী থাকে। রাতের তিনটায় শুটিং শেষ হলে আবার সকাল সাতটায় তাদের ডিউটিতে আসতে হয়। কিন্তু বেশি রাত হয়ে যাওয়ায় তারা হাউজ পরিষ্কার করে রাখতে পারে না। যার কারণে ইউনিটগুলো নানান অভিযোগ করে। এছাড়া দেরিতে শুটিং শেষ হওয়ায় অনেকেই ছিনতাইয়ের শিকার হন। আর আবাসিক এলাকা হওয়ায় বাণিজ্যিক ব্যবহারেরও কিছু নীতিমালা মানতে হচ্ছে।’
এদিকে ‘শুটিং হাউজ অ্যাসোসিয়েশন’র এমন সিদ্ধান্তকে ইতিবাচকভাবেই দেখেছেন নির্মাতা ও কলাকুশলীরা। নির্মাতা মাবরুর রশিদ বান্নাহ বলেন, ‘আমি রাত ১১টার পর শুটিং হাউজ বন্ধের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। কারণ ১১ টায় শুটিং বন্ধ হলে ইউনিটের সবাই পরদিন সময়মত সেটে হাজির হতে পারবো। তাছাড়া অনেক সময় এক রাতের মধ্যে নির্মাতাদের নাটক বানাতে চাপ দেয়া হয়। এতে নাটকের মান কমে যায়। সেদিক থেকে এখন আর এই অন্যায় অনুরোধ শুনতে হবে না। যেমন, প্রডিউসার অনেক সময় ধরে বেঁধে দেন এই সময়ের মধ্যে এই কাজটি শেষ করতে হবে। সেভাবে বাজেট ধরে দেন। বাধ্য হয়ে আমরা রাত জেগে কাজ করি। তিন দিনের কাজ বাজেট কম থাকায় দুই দিনেই শেষ করতে হয়। এতে কাজের মান খারাপ হলে দোষ হয় নির্মাতার! এবার অন্তত এই বদনাম কিছুটা দূর হবে। সময়মত কাজ শুরু হবে এবং সময়মত শেষ হবে। বাজেটও কিছুটা হলেও বাড়বে। এই ধারা অব্যাহত থাকুক এটাই আমি চাই।’