ঝিনাইদহের মেয়ে সোনিয়া আক্তারের দিকে তাকিয়ে আছে সারা বাংলাদেশ। অলিম্পিকের ৩১তম আসরে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে বাংলাদেশের হয়ে সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছেন ঝিনাইদহের এই কন্যা।
সোনিয়ার বাড়ি ঝিনাইদহ শহরের ভুটিয়ারগাতি গ্রামে। পিতা এক সময়ের পান বিক্রেতা আনিসুর রহমান। মেয়ের কারণে ভাগ্য বদলেছে বাবা আনিসের। পানের দোকানের পরিবর্তে ঝিনাইদহ শহরের হাটখোলা বাজারে এখন মুদিখানা, বাড়িতে উঠেছে পাকা ঘর। দুঃখ ঘুচেছে পরিবারটির।
সোনিয়ার বাবা আনিসুর রহমান গর্বের সঙ্গে জাগো নিউজকে জানান, অলিম্পিকে চান্স পাওয়ার খবরটি সোনিয়া প্রথম শোনে গ্রামের বাড়িতে গত ঈদের ছুটি কাটাতে এসে। সোনিয়ার মূল ইভেন্ট ৫০ মিটার ফ্রি-স্টাইল, আর তাতে তার ক্যারিয়ার-সেরা টাইমিং ৩০.৮৬ সেকেন্ড। যেটি করেছেন গত বছর রাশিয়ার কাজানে অনুষ্ঠিত বিশ্ব সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপে।
তিনি আরও জানান, বাড়ির পাশে নবগঙ্গা নদীতেই সাঁতার শিখেছে মেয়েটি। বড় ভাই সাঁতার শিখতো ‘জাহিদ স্যারের’ কাছে। ছোট বোন সোনিয়া বায়না ধরে সাঁতার শেখার। বায়না মেটাতে ভাই বোনকে নিয়ে যায় কোচের কাছে।
তিনি আরও জানান, ২০০৩ সালে যশোর শিক্ষা বোর্ডের হয়ে বয়সভিত্তিক সাঁতার দিয়ে শুরু সোনিয়ার ক্যারিয়ার। জুনিয়ারভিত্তিক সাঁতারে ২০০৬ সালে জেতেন ১১টি স্বর্ণ, দুটি ব্রোঞ্জ। আর ২০১০ সালে ১১টি ইভেন্টে অংশ নিয়ে ১০টিতেই জেতেন স্বর্ণ। এর মধ্যে ৯টিতে ছিল জাতীয় রেকর্ড।
তিনি বাংলাদেশ আনসারের হয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করেছেন, এ বছর স্থায়ী চাকরি হয়েছে নৌবাহিনীতে। সোনিয়া প্রথম আন্তর্জাতিক খেলায় অংশ নেন সিঙ্গাপুরে ২০১০ যুব অলিম্পিক গেমসে, ২০১১-তে যুক্তরাজ্যের আইল অব ম্যানে অংশ নেন কমনওয়েলথ যুব গেমসে। এরপর ২০১৪ সালে কাতার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ ও ২০১৫ কাজান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপেও অংশ নিয়েছেন। সবার কাছে মেয়ের জন্য দোয়া প্রার্থী তার বাবা।