ঢাকা: উচ্চহারে চার্জ প্রয়োগ করে রোগীদের পকেট কাটার অভিযোগ রয়েছে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে। কিন্তু বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারীরাও নাখোশ হয়ে উঠছেন। কারণ, গত দশ বছর ধরে কর্মীদের প্রাপ্য লভ্যাংশের টাকা দিচ্ছে না প্রতিষ্ঠানটি।
আর তাই দশ বছরের ফাঁকি দেওয়া অর্থ চেয়ে শ্রমিক কল্যাণ তহবিল থেকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দেওয়া হয়েছে পপুলার ডায়গনস্টিক সেন্টার লিমিটেডকে।
শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের মহাপরিচালক ম আ কাশেম মাসুদ বলেন, ‘২০০৬ সালের শ্রম আইন অনুসারে কর্মীরা লভ্যাংশের ৫ শতাংশ প্রাপ্য হলেও সে অর্থ থেকে তাদের বঞ্চিত করেছে পপুলার। লভ্যাংশের ৫ শতাংশের ৯০ শতাংশই আইন অনুসারে পপুলারের কর্মীদের সরাসরি পাওয়ার কথা। আর বাকি ১০ শতাংশ শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে জমা দেওয়ার কথা। তাই আমরা ২০০৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত পাওনা লভ্যাংশের অর্থ শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে জমা দিতে তাদের চিঠি দিয়েছি। তারা এ পর্যন্ত কোনো অর্থই শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে জমা দেয়নি’।
পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিমিটেডের উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা বলেন, পপুলারকে মালিকপক্ষ বারবার অলাভজনক প্রতিষ্ঠান বলে উল্লেখ করে থাকেন। কিন্তু যদি এটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হয় তাহলে কি করে দিনের পর দিন নতুন নতুন ব্রাঞ্চ খুলছে? আইন অনুসারে যেকোনো প্রতিষ্ঠানের নিট মুনাফার ৫ শতাংশ কর্মীরা প্রাপ্য হবেন। এ ৫ শতাংশের ৮০ শতাংশ পাবেন প্রতিষ্ঠানটির শ্রমিকরা, ১০ শতাংশ শ্রমিকদের তহবিলে আর বাকি ১০ শতাংশ সরকারের শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও তা করছেন না মালিকপক্ষ। ফলে প্রতি বছর একটি বড় অংকের পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শ্রমিক-কর্মীরা।
সম্প্রতি কিছু কিছু কর্মী এ নিয়ে প্রশ্ন তুললেও মালিকপক্ষ আমলে নিচ্ছেন না, যা ভবিষ্যতে বড় ধরনের ক্ষোভের সৃষ্টি করতে পারে বলে ধারণা করছেন ওই কর্মকর্তা।
অন্যদিকে কর্মীদের লভ্যাংশ আইনগতভাবে কিছুতেই পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার এড়াতে পারে না বলে জানিয়েছেন শ্রম আইন বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ।
তিনি বলেন, ‘পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিমিটেড সরকারের শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে কোনো প্রকারের অর্থ আজ পর্যন্ত জমা দেয়নি। প্রতিষ্ঠাটি কোনো অলাভজনক প্রতিষ্ঠান নয়। যদি তাই হতো তাহলে তারা রোগীদের কাছ থেকে কিছুতেই উচ্চহারে ফিস নিতে পারতো না। আর যেহেতু প্রতিষ্ঠানটি একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান তাই তাদের লভ্যাংশের ৫ শতাংশ কর্মীদের দিতে হবে’।
‘এ ৫ শতাংশের ৮০ শতাংশ সরাসরি কর্মীরা পাবেন। আর যেহেতু কর্মীরা এ অর্থ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাই তারা ইচ্ছা করলেই পপুলারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারেন। কর্মীদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা একটি অপরাধও বটে’।
তবে এসব বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন পপুলার কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানটির জেনারেল ম্যানেজার (মার্কেটিং) মো. আফজাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘এসব বিষয়ে আমি কিছু বলবো না’।