আলোচিত এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের প্রথম দিন মঙ্গলবার মামলার বাদী রাজউকের অথারাইজড অফিসার হেলাল উদ্দিনের জবানবন্দি দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি আসেননি।
সাক্ষী আনতে না পেরে রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলার আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবির বাবুল সময়ের আবেদন করেন।
তার বক্তব্যর শুনে ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক আফসানা আবেদীন সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ২৬ অক্টোবর নতুন তারিখ ঠিক করে দেন।
সময়ের আবেদনের কারণ জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আনোয়ারুল কবির বাবুল বলেন, আসামি বজলুস সামাদ আদনান এবং মাহমুদুর রহমান তাপস অভিযোগ গঠনের আদেশের বিরুদ্ধে জজ আদালতে রিভিউ আবেদন করায় মামলার নথিপত্র এই আদালতে ছিল না।
তবে বাদীর অনুপস্থিতির বিষয়টিকে রাষ্ট্রপক্ষের ব্যর্থতা বলেই মনে করছেন ফৌজদারি মামলার অভিজ্ঞ আইনজীবী দুলাল মিত্র।
তিনি বলেন, “মামলার মূল নথিপত্র রিভিশনের শুনানিতে থাকলেও সাক্ষ্য গ্রহণের দিন বাদীকে আনতে রাষ্ট্রপক্ষের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেজন্য পুলিশ রাষ্ট্রপক্ষকে সহযোগিতা করবে।”
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকালে সাভার বাসস্ট্যন্ড সংলগ্ন আট তলা রানা প্লাজা ভেঙে পড়লে শিল্পক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
ওই ঘটনায় নিহত হন এক হাজার ১৩৫ জন, আহত হন আরও হাজারখানেক শ্রমিক যারা ওই ভবনের পাঁচটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।
বাংলাদেশের ওই ঘটনা সে সময় আন্তর্জাতিক সব গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়। দেশে কারখানার অবকাঠামোগত নিরাপত্তা ও কর্মপরিবেশের বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এলে সরকার ও মালিকরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়।এরপর ভবন ধসে প্রাণহানির ঘটনায় হত্যার অভিযোগে একটি, ইমারত বিধি না মেনে রানা প্লাজা নির্মাণের অভিযোগে একটি এবং দুদকের পক্ষ থেকে ভবন নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগে আরেকটি মামলা করা হয়।
তদন্ত শেষে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার বিজয় কৃষ্ণ কর ২০১৫ সালের ১ জুন ইমারত বিধির মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম মুস্তাফিজুর রহমান গত ১৪ জুন ভবন মালিক সোহেল রানাসহ ১৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
সেদিনই সাক্ষ্যে গ্রহণ শুরুর জন্য ২৩ অগাস্ট দিন ঠিক করে দিয়েছিল আদালত।
মামলার আসামিদের মধ্যে ভবন মালিক সোহেল রানা, তার বাবা আব্দুল খালেক, মা মর্জিনা বেগম, সাভার পৌরসভার মেয়র মো. রেফাতউল্লাহ, পৌরসভার সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায়, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার হাজি মোহাম্মদ আলী, পৌরসভার সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, সাবেক উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান রাসেল, সাইট ইঞ্জিনায়ার মো. সারোয়ার কামাল, ওই ভবনের ভাড়াটে নিউ ওয়েভ বটমসের চেয়ারম্যান বজলুস সামাদ আদনান, এমডি মাহমুদুর রহমান তাপস, ইথার টেক্সের এমডি আনিসুর রহমান এবং ফ্যান্টম অ্যাপারেলসের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম অভিযোগ গঠনের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আর সাভার পৌরসভার সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, সাবেক টাউন প্ল্যানার ফারজানা ইসলাম, মাহবুব আলম, রেজাউল ইসলাম ও নান্টু কন্ট্রাক্টর পলাতক।