প্রতিবেদক : নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ আলাদা করতে মাসদার হোসেন মামলার রায়ের আলোকে অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা চূড়ান্ত করে ২৪ নভেম্বরের মধ্যে তার গেজেট আদালতে দাখিল করতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে আপিল বিভাগ।
সোমবার রাষ্ট্রপক্ষের আট সপ্তাহের সময়ের আবেদনের শুনানি করে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে নয় বিচারকের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আদালত বলেছে, বিধিমালা করার জন্য ২৪ নভেম্বরই শেষ সময়; এর পর আর সময় সরকারকে দেওয়া হবে না।
মাসদার হোসেন মামলার চূড়ান্ত শুনানি করে ১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সরকারের নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে আলাদা করতে ঐতিহাসিক এক রায় দেয়।
ওই রায়ে আপিল বিভাগ বিসিএস (বিচার) ক্যাডারকে সংবিধান পরিপন্থি ও বাতিল ঘোষণা করে। একইসঙ্গে জুডিশিয়াল সার্ভিসকে স্বতন্ত্র সার্ভিস ঘোষণা করা হয়। বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করার জন্য সরকারকে ১২ দফা নির্দেশনা দেয় সর্বোচ্চ আদালত।
মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পর ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা হয়ে বিচার বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়। এছাড়া নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালার একটি খসড়া মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আদালতে দাখিল করা হয়।
সরকারের খসড়াটি ছিল ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার অনুরূপ হওয়ায় তা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী বলে গত ২৮ আগাস্ট শুনানিতে জানায় আপিল বিভাগ।
এরপর ওই খসড়া সংশোধন করে সুপ্রিম কোর্ট আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। সেইসঙ্গে ৬ নভেম্বরের মধ্যে তা চূড়ান্ত করে প্রতিবেদন আকারে আদালতে উপস্থাপন করতে বলা হয় আইন মন্ত্রণালয়কে।
রোববার মামলাটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় এলে অ্যাটর্নি জেনারেল কোনো অগ্রগতি জানাতে না পারায় বিধিমালা চূড়ান্ত করার বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা লিখিতভাবে জানাতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দেয় আপিল বিভাগ। পাশাপাশি বিষয়টি সোমবার আদেশের জন্য রাখা হয়।
এরপর সোমবার এ্যটর্নি জেনারেল সময় চেয়ে আবেদন করেন। কিন্তু আবেদনটি ‘অস্পষ্ট’ জানিয়ে আট সপ্তাহ সময় না দিয়ে ২৪ নভেম্বরের মধ্যে যে বিধিমালা চূড়ান্ত করে তা গেজেট আকারে জারি এবং আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত।