আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় সর্বাধিক প্রচারিত ‘ইউএসএ টুডে’ পত্রিকার ভাষ্যমতে কমপক্ষে ১০টি প্রধান শহর ও কলেজ ক্যাম্পাসসহ দ্রুততর যান চলাচলের হাইওয়ে অবরোধ করে এমনকী নিউইয়র্কের ‘ট্রাম্প টাওয়ার’-এর সন্মুখে হাজারো প্রতিবাদী মানুষ বিক্ষোভের সূচনা করেছে। তারা সোস্যাল মিডিয়ায় যোগাযোগ করে নিজেদের একত্রিত করছে।
এ সকল প্রতিবাদীদের অন্যতম শ্লোগান- ‘নট মাই প্রেসিডেন্ট, হে-হে, হো-হো, ডোনাল্ড ট্রাম্প হ্যাজ গট টু গো’। অর্থাৎ ডোনাল্ড ট্রাম্প আমার প্রেসিডেন্ট নয়, তাকে যেতেই হবে। গত বুধবার অতি প্রত্যুষে ওই নির্বাচনি ফলাফল ঘোষণার পর পরই রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি’র হোয়াইট হাউজের সন্মুখ থেকে এ প্রতিবাদ বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে। তারা নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের নিউইয়র্ক সিটি ছাড়াও ইলিনয়ের শিকাগো, ম্যাসাচুসেটসের বোস্টন, প্যানসেলভেনিয়ার ফিলাডেলফিয়া, ক্যালিফোর্নিয়ার সানফ্রান্সিসকো, লস অ্যাঞ্জেলেস ও ওকল্যান্ড, ওয়াশিংটনের সিয়াটল, ওরিগনের পোর্টল্যান্ড, রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি, মিনেসোটার সেন্ট পল, ভার্জিনিয়ার রিচমন্ড, নেব্রাস্কার ওমাহা এবং টেক্সাসের অস্টিনে বিক্ষোভ করেছে। এতে ক্যালিফোর্নিয়ার বিক্ষোভে অগ্নিসংযোগ, ভাঙ্গচুর ও ট্রাম্পের কুশপুত্তলিকাদাহের মতো ঘটনা ঘটেছে।
ওয়াশিংটন ডিসি’র চ্যানেল ফোরের ভাষ্য- প্রতিবাদীরা হোয়াইট হাউজ থেকে প্যানসেলভেনিয়া অ্যাভিনিউর ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেলের সন্মুখে জড়ো হয় এবং সেখানে তারা আমেরিকার পতাকায় আগুন ধরিয়ে শ্লোগান দিতে থাকে: ‘নো রেসিস্ট ইউএসএ, নো ট্রাম্প, নো কেকেকে’! সেখানে ওয়াশিংটনের বাসিন্দা রেবেকা লিন্ড্রিও ‘লাভ ট্রাম্পস হেইট’ প্লাকার্ড হাতে এমন ঘটনা অপছন্দ করলেও ট্রাম্প দম্পতির প্রতি তার ঘৃণা প্রকাশ করেছে।
ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের বোস্টনগ্লোব জানিয়েছে- বুধবার রাতেই হাজারো জনতা ট্রাম্পের প্রতি ঘৃণাসম্বলিত প্লাকার্ড হাতে বেকন হিল থেকে কপলি স্কোয়ারে গিয়ে মিলিত হয়। বোস্টনের ‘সোস্যালিস্ট স্টুডেন্টস মুভমেন্ট ফর নাইনটিনাইন পার্সেন্ট’ বিক্ষোভটি আয়োজন করে।
লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস জানিয়েছে- হাজারো প্রতিবাদীর সবচেয়ে বড় সমাবেশটি সিটি হলের সন্মুখে জড়ো হয়ে ট্রাম্পের কুশপুত্তলিকাদাহ করেছে। পরে রাতে তারা হাইওয়ে ১০১ জড়ো হয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। পুলিশ তাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের আহ্বান জানালেও ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করে।
নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে- হাজারো মানুষ ইউনিয়ন স্কোয়ার থেকে ম্যানহাটনের সেন্ট্রাল পার্কের কাছে ট্রাম্পের বাসভবনের সন্মুখে গিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং তাদের অন্যতম শ্লোগান ছিল: ‘নট আওয়ার প্রেসিডেন্ট’! সেখানে আবর্জনার গাড়ী এনে প্রতিবাদীদের জন্য প্রতিরোধ ব্যুহ তৈরি করা হয়। প্রতিবাদীদের একজন, ইমানুয়েল পেরেজ বলেছে- সে ট্রাম্পের অভিবাসন বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এসেছে, কারণ তাতে হাজারো পরিবার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।
এদিকে ওই নির্বাচনকালীন কানাডায় যুক্তরাষ্ট্রবাসীদের অনলাইন আগ্রহের কারণে সরকারি অভিবাসন ওয়েবসাইটটি অচল হয়ে পড়ে। তবে বিবিসি সূত্রে প্রকাশ- ওই নির্বাচনি ফলাফল ঘোষণার পর পরই যুক্তরাষ্ট্র থেকে নিউজিয়াল্যান্ড সরকারের অভিবাসন ওয়েবসাইটটিতে আকস্মিক ২৪ ঘন্টায় ২,৫০০ শতাংশ চাপ বেড়ে দাঁড়ায় ৭০,৫০০। এতে প্রতীয়মান হচ্ছে, অনেকেই যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগের পরিকল্পনা করছে।