প্রতিবেদক : ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণ এবং ওষুধ তৈরি, বিক্রি ও আমদানিতে আরও বেশি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় একটি নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ গঠনের সুযোগ তৈরি করে জাতীয় ঔষুধ নীতি অনুমোদন করেছে সরকার। সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘জাতীয় ঔষুধ নীতি, ২০১৬’ অনুমোদন পায়। সরকার এখন এ নীতিমালা প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করবে।
সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের জানান, ২০০৫ সালে সর্বশেষ জাতীয় ওষুধ নীতি করা হয়েছিল “এর মধ্যে অনেক কিছুর পরিবর্তন হওয়ায় নতুন করে এই নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। এই কর্তৃপক্ষের নাম হবে জাতীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ। এই কর্তৃপক্ষ ওষুধের মান থেকে শুরু করে কাঁচামাল ও অন্যান্য সরঞ্জামের মান দেখবে।
বর্তমানে ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর এবং ঔষুধ প্রশাসন পরিদপ্তর এসব বিষয় দেখভাল করে জানিয়ে তিনি বলেন, “এখন ১২২টি দেশে বাংলাদেশের ওষুধ যাচ্ছে। ফলে মান নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।”
নতুন ঔষুধ নীতির আওতায় বিদ্যমান আইন ও বিধিমালা সংশোধন করা হবে। ‘কার্যকর, নিরাপদ ও মানসম্পন্ন’ ওষুধের সহজলভ্যতা এবং ওষুধের যৌক্তিক ও নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করতে সব ওষুধ নিবন্ধন করতে হবে।
এছাড়া নকল, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ প্রস্তুত, বিক্রি ও বিতরণ রোধসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে নীতিতে বিস্তারিত বলা রয়েছে বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান।
তিনি বলেন, ওষুধ নির্বাচন, পরিমাণ নির্ধারণ, ঔষুধ সংগ্রহ, মজুদ ও বিতরণ; ওষুধের বিজ্ঞাপন ও প্রচার নিয়ন্ত্রণ, স্বচ্ছ ও যৌক্তিকভাবে ওষুধের মূল্য নির্ধারণ, দেশে নতুন প্রযুক্তি ও কারিগরি জ্ঞান স্থানান্তর, ওষুধ গবেষণা উন্নয়নে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়েও নীতিতে বলা হয়েছে। এছাড়া কেউ ওষুধের অতিরিক্ত দাম নিলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরকার জনস্বার্থ বিবেচনা করে ওষুধের মূল্য নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা নিয়মিত হালনাগাদ করবে জানিয়ে শফিউল বলেন, প্রতি বছর অন্তত একবার ওষুধের মূল্য তালিকা হালনাগাদ করে জনগণের অবগতির জন্য সব ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে খুচরা মূল্য প্রকাশ করা হবে।
সামরিক শাসনামলে ১৯৭৭ সালে প্রণীত কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অর্ডিনেন্স সংশোধন করে নতুন করে বাংলায় আইন করার একটি প্রস্তাবেও এদিন নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
শফিউল আলম বলেন, “মূলত আগের আইনই যথাসম্ভব রাখা হয়েছে। সময়ের প্রয়োজনে একটু সংশোধন করা হয়েছে। আগের আইনে যে শাস্তির বিধান ছিল সেখানে অর্থদণ্ডের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।”
এছাড়া সামরিক শাসনামলে জারি করা অধ্যাদেশগুলো বাতিলে উচ্চ আদালতের আদেশ থাকায় নতুন করে তৈরি নজরুল ইসস্টিটিউট আইন ২০১৬ ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন ২০১৬ এর খসড়ারও নীতিগত অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা।