1. sardardhaka@yahoo.com : adminmoha : Sardar Dhaka
  2. nafij.moon@gmail.com : Nafij Moon : Nafij Moon
  3. rafiqul@mohajog.com : Rafiqul Islam : Rafiqul Islam
  4. sardar@mohajog.com : Shahjahan Sardar : Shahjahan Sardar
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৭:৪২ অপরাহ্ন

গ্রহণযোগ্য ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতি আশাবাদী

মহাযুগ নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬
  • ২৪৬ বার

প্রতিবেদক : রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে দক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনে আশাবাদী রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেছেন, “নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রস্তাব ও মতামত তুলে ধরছেন। এসব মতামত ও রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার ভিত্তিতে একটি দক্ষ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন সম্ভব হবে বলে আমি আশাবাদী।”

শনিবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনের নতুন ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নতুন ইসি গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসার বিষয়টি তুলে ধরে এই আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপ্রধান।
কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষে আগামী ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেবে নতুন ইসি। ওই কমিশনের অধীনেই ২০১৯ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচন হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন কেমন হবে তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনাও করেন রাষ্ট্রপতি। সংসদের বাইরে থাকা বিএনপির সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে গত ১৮ ডিসেম্বর ইসি গঠনে এই সংলাপের সূচনা হয়। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আটটি দলের সঙ্গে আলোচনা করেছেন রাষ্ট্রপতি।

ভোটের অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, “গণতন্ত্রের প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে এর নির্বাচন। তবে গণতন্ত্রের চর্চা ও বিকাশের জন্য শুধু নির্বাচন অনুষ্ঠানই যথেষ্ট নয়। গণতন্ত্রের ভিত্তি মজবুত করতে হলে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার পাশাপাশি প্রক্রিয়াগত পরিবর্তনেরও প্রয়োজন রয়েছে। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে সজাগ থাকতে হবে।

“সত্যিকারের গণতান্ত্রিক নির্বাচনের অন্যতম পূর্বশর্ত হলো গণতান্ত্রিক পন্থায় পরিচালিত রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ। রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রমে শৃঙ্খলাবিধান দেশে গণতন্ত্রের বিকাশ ত্বরান্বিত করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।”

ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা হালনাগা, দেশব্যাপী জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন সম্পন্ন করায় বিদায়ী নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ দেন রাষ্ট্রপতি হামিদ। তিনি বলেন, জনগণ সবসময় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করে এবং গণতন্ত্রের জন্য তা অপরিহার্য।

“তবে নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে হলে নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি সকল রাজনৈতিক দল, প্রার্থী, সমর্থকসহ সাধারণ জনগণের সদিচ্ছা ও সহযোগিতা অত্যাবশ্যক। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন সকল মহলের সহযোগিতায় সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ায় তা দেশবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। আমি মনে করি, আগামী যে কোনো নির্বাচনের জন্য এ নির্বাচন একটি মডেল হিসেবে বিবেচিত হবে।”

রাষ্ট্রপতি বলেন, নির্বাচন কমিশন সাধারণ নির্বাচন পরিচালনা করে কেবল গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা ও অগ্রযাত্রাই রক্ষা করে না; জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রতিতেও ‘বিপুল ভূমিকা’ পালন করে।

“কারণ নির্বাচন প্রক্রিয়া ব্যাহত হলে গণতন্ত্র মুখ থুবড়ে পড়ে, স্বৈরশাসনের উত্থান ঘটে। জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা হয় ভূলুণ্ঠিত। দেশে আজ যে গণতান্ত্রিক ধারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, দেশ ও জনগণের স্বার্থে তা সম্মিলিতভাবে অব্যাহত রাখতে হবে।”
বর্তমানে শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের পাশে একই চত্বরের ৫ ও ৬ নম্বর ব্লকে ইসি ও ইসি সচিবালয়ের অফিস। লুই কানের করা নকশা অনুযায়ী ওই চত্বর ছিল এমপি হোস্টেলের জন‌্য নির্ধারিত।

কর্মকর্তারা জানান, স্বাধীনতার আগে পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক নির্বাচন কমিশনের দপ্তর ছিল ঢাকার মোমেনবাগে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালে মে মাসের শেষ দিকে ইসির একজন কর্মচারীর সহায়তায় মুক্তিসেনারা ওই কার্যালয়টিতে বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।

এরপর নির্বাচন কমিশন প্রথমে সচিবালয়ে এবং পরে ১৯৭৩ সালে বর্তমান ঠিকানায় স্থানান্তরিত হয়। এখন জেলা নির্বাচন, থানা নির্বাচন ও জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত উইংয়ের কাজ চলছে ভাড়া বাড়িতে।

২০০৭ সালে পশ্চিম আগারগাঁওয়ের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাশে নিজস্ব ভবন নির্মাণের জন্য ২ একর ৩৬ শতাংশ জমি নির্বাচন কমিশনকে বরাদ্দ দেয় গৃহায়ন ও গণপূর্ণ মন্ত্রণালয়।

প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এ ভবন নির্মাণের কাজ ২০১১ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজ শুরুই হয় ২০১২ সালে।

ইলেকশন রিসোর্স সেন্টার (ইআরসি) নামে পরিচিত প্রকল্পে ইসির নিজস্ব ভবনটি দুইটি অংশে নির্মিত হয়েছে, যার একটি অংশ ১২ তলাবিশিষ্ট নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই) ভবন। এ ভবনটি এরই মধ্যে উদ্বোধন করা হয়েছে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এমএ সাঈদের আমলে নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব ভবনের জন্য জমি বরাদ্দ দেয় সরকার। এরপর সিইসি এটিএম শামসুল হুদার সময়ে কমিশন জমি অধিগ্রহণ, ভবনের নকশা চূড়ান্ত করা হয়। কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের কমিশন বিদায়ের আগে ভবনটির উদ্বোধন হল।

দুই লাখ ৫৮ হাজার ৭৭ বর্গফুট বিশিষ্ট ‘নির্বাচন ভবনে’ রয়েছে সৌরবিদ‌্যুৎ ও বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা।

দ্বিতল বেইজমেন্টে শব্দ নিয়ন্ত্রণের ব‌্যবস্থাসহ আধুনিক মিলনায়তন ও নিজস্ব পানি সরবরাহ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

১১ তলা ভবনটির চত্বরে ভাস্কর মৃণাল হকের তৈরি ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের দুটি ভাস্কর্য রয়েছে। দুই ভাগে বিভক্ত ভবনটির পূর্ব অংশে কমিশন অফিস এবং পশ্চিম অংশে ইসি সচিবালয় থাকবে; মাঝখানে থাকছে সুদৃশ্য ফোয়ারা।

আধুনিক রেফারেন্স লাইব্রেরি, মিডিয়া সেন্টার, কনফারেন্স কক্ষ, প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, কেন্দ্রীয় সার্ভার স্টেশন ও ন্যাশনাল আইডি উইংও থাকছে এ ভবনে।

এছাড়া অন্যান্য ফ্লোরে থাকছে নির্বাচন শাখা, পল্লী শাখা, প্রশাসন শাখা, বাজেট শাখা ও আইটি শাখা।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ নতুন ভবনের ফলক উন্মোচন করেন এবং ভবনের সামনে একটি ‘লালপাতা’ গাছের চারা রোপণ করেন। পরে ভবনের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন তিনি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। অন‌্যদের মধ‌্যে সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ, নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল মোবারক, ইআরসির জাতীয় প্রকল্প পরিচালক এসএম আশফাক হোসেন বক্তৃতা করেন।

এ জাতীয় আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2023 Mohajog