প্রতিবেদক : ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় সপ্তাহিক ছুটির দিনে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় লোকারণ্যে পরিণত হয়েছে, যেমনটি আগেই আশা করেছিলেন স্টলকর্মীরা। বেচাকেনাও বেড়েছে প্রায় সবগুলো স্টলে। শুক্রবার প্রথম সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সকাল থেকেই আগারগাঁওয়ের মেলা প্রাঙ্গণে অন্যদিনের তুলনায় বেশি সমাগম দেখা যায়।
দুপুরের পর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রর পূর্ব প্রান্ত পর্যন্ত বেয়ে আসে মেলায় আগত দর্শনার্থীদের সারি। দর্শনার্থীদের পরিবহন, মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কারের ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় মেলার বাইরে দায়িত্বে থাকা পুলিশ, শৃঙ্খলাকর্মীসহ সংশ্লিষ্টদের।
বাংলাদেশ ছাড়াও ২০টি দেশের ব্যবসায়ীরা নিজেদের পণ্যের প্রচারাভিযান নিয়ে মেলায় অংশ নিচ্ছেন। মাসব্যাপী মেলায় এবার ১৩টি ক্যাটাগরিতে মোট ৫৭৭টি প্যাভিলিয়ন ও স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের স্টল রয়েছে ৪৮টি।
মেলার মধ্যভাগে মাঝারি আকারের একটি দেশি প্রতিষ্ঠানের প্যাভিলিয়নও নির্মাণাধীন দেখা গেছে। কুরকুরে নামের প্যাকেটজাত শুকনো খাবারের এই প্যাভিলিয়নের এক কর্মী জানান, মেলায় অংশ নেওয়া না নেওয়া নিয়ে তার প্রতিষ্ঠান দ্বিধায় ছিল। সর্বশেষ এখন অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
নিজেদের কোম্পানির নামেই স্টলটি বরাদ্দ হয়েছে বলে দাবি করে শিহাব বলেন, আগামী তিন দিনের মধ্যে তারা মেলায় আসছেন।
মেলায় দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে রুটি তৈরির কাঠের মেশিন দেখছিলেন একঝাঁক দর্শক। সম্পূর্ণ দেশে তৈরি এই মেশিনের দাম চাওয়া হচ্ছে সাড়ে তিন হাজার থেকে সাত হাজার টাকা পর্যন্ত।
লাইবা রুটি মেকার নামের একটি কোম্পানির বিক্রয়কর্মী জানান, দেখতে সহজ মনে হলেও তাদের রুটি মেকার মেশিন বেশ ব্যয়বহুল। সময়, শ্রম ও ব্যবহার উপযোগিতা বিবেচনায় করে এমন দাম ঠিক করা হয়েছে বলে দাবি তার।
লাইবা রুটি মেকারর সামনে মিনিট দশেক দাঁড়িয়ে বেশ বেচাকেনা হতে দেখা যায়।
বরাবরের মতোই মেলায় আসা ক্রেতাদের হাতে দেখা গেছে গৃহস্থালিপণ্যের প্যাকেট। বিশেষ মূল্যছাড়ের সুযোগ পেয়ে সিরামিকপণ্য, থালা-পেয়ালা, কুকার, ফ্রাইপ্যানসহ অন্তত ১০টি গৃহস্থালিপণ্যের প্যাকেজ নিয়ে এসেছেন স্টলমালিকরা। এছাড়া শাড়ি, থ্রি-পিচ, ছেলেদের ব্লেজারের শো-রুমগুলোতেও ক্রেতাদের আকর্ষণ করতে বিভিন্ন মূল্যহ্রাসের অফার রয়েছে।
পল্লবীর বাসিন্দা শামীমুল হক মেলায় এসেছেন স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে। তিনিও সাড়ে তিন হাজার টাকা মূল্যে গৃহস্থালির একটি প্যাকেজ কিনে বাড়ি ফিরছিলেন।
শামীমুলের স্ত্রী বলেন, কিছু দরকারি জিনিসপত্র কিনেছেন তারা। তবে নিজের ঘরের জন্য নয়, কয়েকদিন পরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এক নিকটাত্মীয়ের বিয়েতে উপহার হিসেবে দেবেন।
গ্লাস সেট, কাপ-পিরিচ, চামচসহ আরও অনেক কিছু আছে তাদের প্যাকেজে।
অবশ্য কাপড়ের মূল্যছাড় নিয়ে দ্বিমত করলেন সরকারি তিতুমির কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সোহেল। তার মতে, যেসব থ্রি-পিচে ছাড় দেওয়া হচ্ছে এগুলোর মান খুব ভালো নয়। কিছুপণ্যের দাম বাড়িয়ে আবার ৩০/৪০ পার্সেন্ট ছাড় দেওয়া হয়েছে। এটা বেচাকেনার কৌশল।
অবশ্য ব্লেজার কেনার জন্য বাণিজ্য মেলাকে ভালো সুযোগ বলে দাবি সোহেলের। মেলায় বিভিন্ন স্টলে সাড়ে ছয়শ টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে বিভিন্ন মানের ব্লেজার বিক্রি হচ্ছে।
সুত্র : বিডিনিউজ