1. sardardhaka@yahoo.com : adminmoha : Sardar Dhaka
  2. nafij.moon@gmail.com : Nafij Moon : Nafij Moon
  3. rafiqul@mohajog.com : Rafiqul Islam : Rafiqul Islam
  4. sardar@mohajog.com : Shahjahan Sardar : Shahjahan Sardar
শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ০৬:০৫ অপরাহ্ন

চার মাস কোনো শরণার্থী নেবে না যুক্তরাষ্ট্র

মহাযুগ নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০১৭
  • ১৯৫ বার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রমুখী অভিবাসন সীমিত করতে বহু আলোচিত সেই নির্বাহী আদেশে সই করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।  তার এই আদেশের ফলে আগামী চার মাস আর কোনো শরণার্থী যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সুযোগ পাবে না।

সিরীয় শরণার্থীদের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত। এর বাইরে আরও কয়েকটি মুসলমানপ্রধান দেশের নাগরিকদেরও কড়াকড়ির মুখে পড়তে হবে, যাকে ট্রাম্প বলেছেন ‘একস্ট্রিম ভেটিং মেজার্স’।

ট্রাম্প বলছেন, তার এই পদক্ষেপ উগ্র ইসলামিক জঙ্গিদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে দূরে রাখবে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প যে নির্বাহী আদেশে সই করেছেন, তাতে এ বছর যুক্তরাষ্ট্র সর্বোচ্চ ৫০ হাজার শরণার্থী গ্রহণ করতে পারবে। এ সংখ্যা আগের বছরগুলোর সীমার অর্ধেকেরও কম।

গত বছর বারাক ওবামার প্রশাসন ১০ হাজার সিরীয় শরণার্থীকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছিল। আর যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার নয়ভাগের একভাগ মানুষের দেশ কানাডা নিয়েছিল ৩৫ হাজার সিরীয় শরণার্থী।

শুক্রবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে জেনারেল জেমস মেটিসের শপথের পর পেন্টাগনে বসে ট্রাম্প এই আদেশে সই করেন।

অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, “উগ্র ইসলামি সন্ত্রাসীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে দূরে রাখতে নতুন এই ভেটিং ব্যবস্থা আমি চালু করছি। আমরা শুধু তাদেরকেই আসতে দিতে পারি, যারা আমাদের দেশকে সমর্থন দেবে এবং আমাদের জনগণকে গভীরভাবে ভালোবাসবে।”

যা যা আছে ট্রাম্পের আদেশে

# পরবর্তী চার মাস যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থী নেয়া বন্ধ থাকবে।

# বড় কোনো পরিবর্তন না ঘটা পর্যন্ত সিরীয় শরণার্থীদের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।
# ইরাক, সিরিয়াসহ ‘উদ্বেগজনক অঞ্চলের’ দেশ ইরান, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেন থেকে আগামী ৯০ দিন কেউ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি পাবে না।

# ভবিষ্যতে শরণার্থীদের আবেদন বিবেচনার ক্ষেত্রে ধর্মীয় পরিচয় গুরুত্ব দেওয়া হবে, যদি আবেদনকারী নিজের দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু হয়ে থাকেন।

ট্রাম্পের এ আদেশের খসড়ায় সিরিয়ার ভেতর ‘নিরাপদ অঞ্চল’ গড়ে তোলার কথা বলা হলেও মূল আদেশে তেমন কিছু রাখা হয়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি।

শুক্রবার এক টিভি সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ভবিষ্যতে সিরীয়দের মধ্যে খ্রিস্টানদের শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় দেওয়ার কথা তার সরকার বিবেচনা করে দেখবে।

সমাজে ইতিবাচক অবদান রাখার ক্ষেত্রে আবেদনকারীর সম্ভাবনা যাচাই করে দেখার জন‌্য অভিবাসন কর্মসূচিতে প্রশ্ন রাখার কথাও বলা হয়েছে ট্রাম্পের আদেশে।

এছাড়া যে কোনো দেশের নাগরিককে ভিসা দেয়ার ক্ষেত্রে আরও বিস্তৃত যাচাই বাছাইয়ের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।

যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের মতের সম্পূর্ণ বিপরীত মত ধারণ করে- এমন দেশের নাগরিকদের ভিসা দেওয়ার কর্মসূচি পুনর্মূল্যায়ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ট্রাম্পের আদেশে।

তবে ব্যতিক্রমী কারও কারও ক্ষেত্রে এ কড়াকড়ি প্রযোজ্য নাও হতে পারে। এজন্য ‘কেইস-বাই-কেইস’ এগোতে বলেছেন ট্রাম্প।

এদিন ট্রাম্প সামরিক বাহিনী পুনর্গঠনের লক্ষ‌্য নি য়ে আরেকটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন, যেখানে ‘উর্দিধারী নারী ও পুরুষদের জন্য নতুন বিমান, নতুন জাহাজ, নতুন সম্পদ ও নতুন সরঞ্জাম বানানোর পরিকল্পনা’ নিতে বলা হয়েছে।

নির্বাচনী প্রচারের সময় ট্রাম্প বলেছিলেন, ক্ষমতায় গেলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমানদের প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ করে দেবেন, যতক্ষণ না তারা পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারছেন। তবে গত নভেম্বরের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর এ নিয়ে আর কিছু বলেননি ট্রাম্প।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের হলোকাস্ট মেমোরিয়াল ডে তে ট্রাম্পের স্বাক্ষর করা ওই আদেশের তীব্র সমালোচনা কর ডেমোক্রেট সিনেটর কমলা দেবী হ্যারিস বলেন, “কোনো ভুল নয়- এটি মুসলমানদের উপর নিষেধাজ্ঞাই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন গণহত্যার সময়ে আমরা আনা ফ্রাংকের মত শরণার্থীদের আমাদের দেশে আনতে ব্যর্থ হয়েছি। আমরা আবারও ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হতে দিতে পারি না।”

নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী মালালা ইউসুফজাই বলেছেন, ট্রাম্পের ওই আদেশে তার হৃদয় ভেঙে গেছে।

“সহিংসতা ও যুদ্ধের শিকার শিশু, তাদের মা ও বাবার জন্য সাহায্যের দরজা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আজ বন্ধ করে দিলেন।
“শরণার্থী ও অভিবাসীদের গ্রহণ করার যে গর্বের ইতিহাস ছিল আমেরিকার, আজ তা উল্টে গেল- এ মানুষগুলোই আপনার দেশ নির্মাণ করেছে। এই অভিবাসী, শরণার্থীরা নতুন জীবনের বিনিময়ে কঠোর পরিশ্রমের জন্য এখনও প্রস্তুত।”

ফেইসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গও ওই আদেশের সমালোচনা করেছেন। ফেইসবুকে দীর্ঘ এক নোটে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্টের নতুন নির্বাহী আদেশে তিনি উদ্বিগ্ন। জানান, অনেক আমেরিকানের মত তিনিও অভিবাসী পরিবারের সন্তান।

“এ বিষয়টি আমার কাছে পরিবারের চেয়েও ব্যক্তিগত। কয়েক বছর আগেও আমি স্থানীয় একটি মধ্যবিত্ত স্কুলে পড়াতাম। সেখানকার সেরা কিছু শিক্ষার্থী ছিল অনিবন্ধিত। তারাও আমাদের ভবিষ্যৎ,” বলেন তিনি।

এ জাতীয় আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2023 Mohajog